সকালে মর্নিং ওয়াক করতে বেরিয়ে রাস্তার আশেপাশের আবর্জনা দেখে , তা পরিষ্কার করার অভিনব পন্থা অবলম্বন করলেন এই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।

একটু কথা খুব প্রচলিত এ পৃথিবীকে সকলের বাসযোগ্য করে যাব আমরা, আগামী প্রজন্মের তরে। কিন্তু প্রত্যেকে আমরা কথাটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হলেও কেউই সেটি বাস্তবের করিনা। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গবেষণা মাধ্যমে বিভিন্ন রিপোর্ট উঠে এসেছে যাতে দেখা যাচ্ছে প্লাস্টিক বর্জন তা নিয়ে বহু প্রকল্প হয়েছে।
প্লাস্টিক বর্জন না করলে ইতিমধ্যে কিভাবে সামুদ্রিক প্রাণীদের মৃত্যু ঘটছে, প্লাস্টিক সমুদ্রের এবং মাটির মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবে জমা হচ্ছে, যার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকছে না। কারণ প্লাস্টিক পচনশীল দ্রব্য নয়, কিন্তু সবকিছু জেনেও আমরা একই কাজ করে চলেছি। সম্প্রতি একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, নাম গৌরব তিনি এবং তার আরো কিছু বন্ধু মিলে একটি কর্মকাণ্ড চালিয়েছিলেন, যেখানে দেখা গেছে তিনি রোজ সকালে মর্নিং ওয়াক করতে গিয়ে ময়লা সংগ্রহ করতেন। আমরা জানিই রাজধানীর রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তুপ হয়ে থাকে এবং সেখান দিয়ে লোকজন প্রায়ই নাক বন্ধ করে যাতায়াত করেন, কিন্তু কেউই সেটিকে সমাধান করার চেষ্টা করেন না।
তাই জন্য গৌরব মনে করেন যে এই সমস্ত ময়লা নোংরা পরিস্কার করতে কর্তৃপক্ষের উপর নির্ভর না করে নিজেরাই করে নেওয়া ভালো। ২৪ বছর বয়সী এই তরুণ তাই শহরকে পরিষ্কার রাখতে যথেষ্ট প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, কিশোর বয়স থেকে তিনি এই কর্মকাণ্ড শুরু করেছিলেন তার এই পুনে ভিত্তিক ক্লিপ ড্রাইভের যোগ দেয়া এবং ব্লগিং এর ধারণা এটা তিনি শিখেছিলেন, মূলত এটি সুইডেনে শুরু হয়েছিল। সেখানকার লোকেরা যোগ এর সময় আবর্জনা তুলত সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বন্ধুদের সাথে তাই গৌরব শহর পরিষ্কার করার কাজ করতেন। গৌরব ও কিছু বন্ধু তার সঙ্গে জড়িত ছিল, লোকেরা তাদের কাজ দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং আস্তে আস্তে তা গণ আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল।
2019 সালের গৌরব পুনে ব্লগার প্রতিষ্ঠা করেছিল, একশটি ব্লগিং সম্পন্ন করেছিল যা যথেষ্ট প্রশংসাযোগ্য। এছাড়াও গৌরব জানিয়েছেন তারা জুলাই এর পর পাইলট প্রকল্প হিসেবে ব্লগিং শুরু করেছিলেন, পনেরো-কুড়ি জন আরেকটি ছোট সম্প্রদায় ছিল, তবে সপ্তাহের শেষে উইএন্ডে ছুটিতে অনেক লোক এতে অংশগ্রহণ করতেন, তারা প্রতিদিন এই কাজে অংশগ্রহণ করতে পারতেন না।
তবে কিছু মানুষ ছিল যারা প্রতিদিনই তার সাথে হাটতে যেতেন এবং আবর্জনা সংগ্রহ করতেন। আস্তে আস্তে এভাবে তারা প্রায় সেপ্টেম্বর থেকে ৪০ হাজার কেজি আবর্জনা তুলতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে তার কাজের কথা জানতে পেরে পুনে শহরও তাদের সাথে মিলিত হওয়ার আহ্বান দিয়েছেন। যার ফলে একটি মেগা মেগা ব্লগ গাথনের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে লক্ষাধিক লোক অংশগ্রহণ করবে বলে জানা যায় এবং তাতে প্রায় কুড়ি হাজারের বেশি প্লাস্টিক সংগ্রহ করেছে বলে জানা যায়।
তবে এইভাবে একজন পরিবেশবিদ কে পেয়ে মানুষরা যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত, কারণ এই ধরনের মানুষ থাকলে তবেই হয়তো আস্তে আস্তে প্রতিটা মানুষ নিজেদের পরিবেশের প্রতি সচেতন হবেন। গৌরবের কথায় আমাদের আশে পাশে পড়ে থাকা আবর্জনা প্রথমে তুলতে শুরু করতে হবে, তবেই মানুষ বুঝতে পারবে যে তারা কি ভুল কাজ করেন। এভাবেই হয়তো মানুষের মধ্যে সচেতনতা জাগিয়ে তোলা যাবে।