এক সাহসিক সিদ্ধান্তে জীবন পাল্টে গেছে, গুগলের চাকরি ছাড়ার পরে সিঙ্গারার দোকান দিয়ে আজ এই যুবক কোটিপতি

গুগোল, যাকে ছাড়া আমাদের আর এক মুহূর্ত চলে না। এই সংস্থায় চাকরি মানেই হাতে চাঁদ পেয়ে যাওয়া। অনেক ব্যক্তি এমন আছেন যারা এই লোভনীয় চাকরির জন্য বসে থাকেন, আবার অনেকেই আছেন যারা এই লোভনীয় চাকরির হাতছানিতে সাড়া না দিয়ে নিজের মত করে জীবন অতিবাহিত করতে চান। অনেকেই আছেন যারা অন্যের হুকুমে কাজ করতে চান না। নিজে ব্যবসা খুলে বসতে চান। এমনই একজন মানুষ হলেন মুনাফ কাপাডিয়া। যিনি গুগলের মত একটি সংস্থায় চাকরি পেয়েও ছেড়ে দিলেন শুধুমাত্র নিজের মত জীবন কাটাবেন বলে।
চাকরিতে থাকাকালীন তিনি প্রত্যেকদিন ভাবতেন, জীবনে এমন কিছু করা দরকার যা তিনি নিজে পছন্দ করেন। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই এই চাকরীর মায়া ছেড়ে তিনি বের হতে পারছিলেন না। বিশাল অংকের চাকরির মায়া কাটানোর যে খুবই মুশকিল তা আমরা সকলেই জানি। উপার্জনের জন্য অন্য কোন সঠিক রাস্তা খুঁজে না পেয়ে চাকরি ছাড়া যায় না। তাই বিকল্প পরিকল্পনা চিন্তাভাবনা করে অবশেষে তিনি লোভনীয় চাকরি ছেড়ে দিলেন। চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি হায়দ্রাবাদ থেকে মুম্বাইতে চলে এলেন।
চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করার পরিকল্পনা নিলেন তিনি। তার এই কাজে সম্পন্ন সাহায্য করলেন তার মা। মোনাফের মা খুব সুন্দর রান্না করতে পারতেন। মায়ের রান্নাকে অবলম্বন করে জীবনের প্রথম ব্যবসা শুরু করলেন মুনাফ। শুরু করলেন একটি ডেলিভারি কিচেন। যেখানে অনলাইন অর্ডার নিয়ে তিনি খাদ্য সরবরাহ করতেন। আস্তে আস্তে তার ব্যবসা শুরু হয়ে গেল। ব্যবসা বাড়ানোর জন্য তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগলেন।
কিন্তু ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য যে বিপুল পরিমাণে অর্ডার প্রয়োজন ছিল তা তার কাছে ছিল না। তাই বেশিরভাগ মানুষ তার কথা জানতে পারছিলেন না। একটা সময়ে মনে ছিল যখন তিনি ব্যবসা বন্ধ করার কথা চিন্তাভাবনা করেছিলেন। ঠিক এই মুহূর্তে একটি আশ্চর্য ঘটনা ঘটে গেল। মোনাস যখন তার ব্যবসা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছিল তখন ঠিক এই সময়ে ফোবস ইন্ডিয়া থেকে তার কাছে একটি ফোন আসে।
তারামন আজকে জানান, মোনাফের ব্যবসা নিয়ে তারা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করার চিন্তাভাবনা করছেন। এই একটি কথা তাকে একেবারে ঘুরিয়ে দেয়। মুনাফ ভাবেন, তার মায়ের হাতের রান্না যখন ফোবস ইন্ডিয়া অব্দি পৌঁছে গেছে তাহলে ঠিক একদিন না একদিন তিনি ঘুরে দাঁড়াবেন। তারপরে যাত্রাটা কিছুটা স্বপ্নের মতো ছিল। তিনি মুম্বাই শহরে সিঙ্গারার দোকান খুলে বসলেন।
তার সিঙ্গারা চোখে দেখার জন্য ভিড় করতে লাগলেন প্রচুর মানুষ। তারপরই তাকে ফিরে তাকাতে হয়নি। মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল এই সিঙ্গারার সুনাম। বহু নামিদামি মানুষ এই সিঙ্গারার প্রশংসা করেছেন। আজ এই রেস্টুরেন্ট সিঙ্গারার গণ্ডি ছাড়িয়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। তিনি আরো একবার প্রমাণ করে দেন যে মানুষ চাইলে সবকিছু করতে পারে। তাই হয়তো তিনি পেরেছিলেন একটি লোভনীয় চাকরি ছেড়ে দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে।