ছোটবেলা পয়সার অভাবে বাসে চলতে পারতো না একটা আস্ত বাস বাড়ি বানিয়ে ফেললেন এই মৃৎশিল্পী

ছোটবেলায় আমাদের অনেক কিছুই ইচ্ছা জাগে। কিন্তু আর্থিক পরিস্থিতি হোক অথবা অন্য কোনো প্রতিকুলতা, সেই সব স্বপ্ন আমাদের সব সময় সত্যি হয় না। তেমনই এক মৃৎশিল্পী ছোটবেলা থেকে খুব ইচ্ছা করতো বাসে করে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে। কিন্তু টিকিট কাটার যে মূল্য তা অধিকাংশ সময় তাদের ছিল না। সাইকেলের সবারই খুব কমই হতো কারণ সাইকেল বলতে গোটা বাড়ির ওই একটি।

পায়ে হেঁটে বেশিরভাগ সময়ই যাতায়াত করতে হতো তাদের। ছোটবেলা থেকেই মূর্তি বানানোর দিকে ঝোঁক ছিল এই ব্যক্তির। পরে সেটাই কখন যে পেশা হয়ে দাঁড়ায় তা বুঝতে পারেন না তিনি। তবে মৃৎশিল্পী হলেও আর্থিক সংকট কোন দিন কাটে নি তার। মূর্তি বানাতে বানাতে এই শিল্পীর মাথায় অন্য ধরনের একটি ভাবনা ঘুরতে লাগলো।

এই চিন্তা ভাবনাকে অবশেষে বাস্তবে রূপান্তরিত করে ফেলেন তিনি। গড়ে তুলেন একটি ছোট্ট খাটো বাড়ি। দূর থেকে মনে হবে যেন একটি বাস দাঁড়িয়ে আছে। আসলে বাসের আদলে তিনি তৈরি করেছেন তার বাড়িটি। বাড়িতে লোকজন এলে এক সময় বসার জায়গা ছিল না তাদের। আস্তে আস্তে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে এবার অনবদ্য উপায়ে বাড়ি তৈরি করে ফেলেন এই মৃৎ শিল্পি।

বীরভূমের পারুই থানার গ্রামের বাসিন্দা উদয় দাস। ছোটবেলা থেকেই মাটি সিমেন্ট নিয়ে দেবদেবী সহ বিভিন্ন মূর্তি করেছেন তিনি। গ্রামের ইতিমধ্যে তার শিল্পকলার চর্চা রয়েছে এবং কদর রয়েছে। বাড়ির আদরের ছোট্ট একটি বাড়ি তৈরি করে ফেললেন তিনি। ধনাই গ্রামে ঢোকার মুখেই আপনি দেখতে পাবেন যেনো বোলপুর সিউরি রোডের একটি বাস দাঁড়িয়ে আছে। এটা কিন্তু আসলে একটি বাড়ি।

এই বাড়িটির খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে বহু মানুষ এসে এই বাড়িটি ছবি তুলতে শুরু করেছেন। ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয়রা। আশেপাশের গ্রাম গঞ্জে থেকে মানুষ দেখতে আসেন এই বাড়িটি। কোনদিন বাসে উঠার উপায় ছিল না যার, সে একেবারে বাড়ি তৈরি করে ফেললেন আস্ত একটি বাসের আদলে।

Back to top button