৮ বছর বয়সে “বাবা-মা” হারিয়েছিলো, দিদা দিন মজুরী করে মানুষ করেছে আজ ভারতের হয়ে অলিম্পিকে দৌড়াবে

প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে লড়াই করে যাওয়ার নামই হচ্ছে জীবন। জন্ম থেকে আমরা বেঁচে থাকার লড়াই করে থাকি, আর সেই প্রতিমুহূর্তে লড়াই করে বাঁচার নামই হল জীবন। প্রত্যেকের জীবনের নানান মর্মস্পর্শী কাহিনী থাকে, তা কারো সামনে আসে তো কারো অজানাই থেকে যায়।সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বর্তমানে এই সমস্ত কাহিনী আমাদের সামনে উঠে আসছে, এমন একটি কাহিনী হল তামিলনাড়ু র রেভথি বীরমনি। তামিলনাড়ুর একটি ছোট্ট গ্রাম থেকে উঠে আসে একটি মেয়ে, যিনি বর্তমানে এখন টোকিও অলিম্পিকে লড়াই করছেন, তাঁর বয়স যখন সাত বছর সেই সময়ে তিনি তাঁর বাবাকে হারান এবং তার এক বছরের মধ্যেই মাতৃহারাও হন। এই পরিস্থিতিতে তাদের করুন অবস্থা ছিল, এই বিরাট বড় পৃথিবীতে একা হয়ে পড়ে তারা রেভাথি ও তার বোন দুজনেই সে অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছিল।
কিন্তু সেই সময় তাদের আশ্রয় হয়ে পাশে দাঁড়ান তাদের নানি, যিনি দিনমজুরি খেটে, তাদের মানুষ করেন। যার ফলে পরবর্তী কালে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা শুরু করেছিলেন রেভথি, খেলায় বরাবরই ভাল ছিল, এমনকি একটা সময়ে তার জুতো কেনার পয়সা ছিল না, যার ফলে তিনি খালি পায়েই দৌঁড়াতেন এবং সেইসাথে তারপর তার প্রতিভার কদরও দেন তার কোচ ,তার জীবনে ত্রাতা হয়ে আসেন, তিনি তাঁর কলেজের ফি দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন, এমনকি তার দৌড়ের জন্য যে জুতো দরকার, সেটারও তিনি ব্যবস্থা করেন, এমনকি সেই সময় তার ঠাকুমাকে উপহাস্য ঠাট্টা করত সবাই, কারন এই অভাবের সংসারে কেন তিনি রেভথিকে খেলার জন্য উৎসাহিত করেন? কিন্তু সেসব কথা পরোয়া না করে তার নানী তাকে সবসময় খেলাধুলার জন্য উৎসাহ যুগিয়েছেন।
তারই উৎসাহের জন্য লড়াই আত্মবিশ্বাস পায় রেভথি, তার জীবনের এত বড় সংগ্রামে সবসময় পাশে পেয়েছেন তাঁর নানীকে। বহু বছর ধরে লড়াই চালিয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি জিতেছেন, বর্তমানে চাকরি করেন রেলওয়েতে, চাকরির জন্য ৪০০ মিটার দৌড় থাকে তা তিনি মাত্র ৫৩.৫৫ সেকেন্ডে শেষ করেন এবং তার জন্য সম্মানিতও হন, পরে অবশ্য ৪০০ মিটার রিলে টোকিও অলিম্পিকে জন্যেও তিনি নির্বাচিত হয়েছিল। এ ধরনের মেয়েরা আমাদের গর্ব, বাঙালির ঘরে ঘরে লুকিয়ে রয়েছে এমন প্রতিভা, শুধুমাত্র জীবন যুদ্ধের মধ্যে সেইসব প্রতিভা হারিয়ে যায়, সঠিক পথ অনুসরণ করতে পারে না। তারা কারন মানুষের জীবনে পেটের দায় অনেক বড় দায়, তাই জীবনে লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক।