সরকারি গেজেটেড অফিসার ছোট থেকে গরীব বাচ্চাদের দু বেলা মুখে অন্ন তুলে দিতে মাঠে চাষ কোরেও পরিশ্রম করে, জানেন ইনি কে?
বিভিন্ন সোশ্যাল ওয়ার্কার এর সন্ধান আমরা প্রায়শই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আজকাল পেয়ে থাকি। সোশ্যাল মিডিয়াযর দৌলতে তাদের কাজকর্ম এর সন্ধানও যেমন পাই, তেমনি আমরা পেয়েছি সোশ্যাল ওয়ার্কার অতীন্দ্র কেও। যার দৌলতে রানাঘাটের রানু মন্ডল হয়ে উঠেছিলেন বলিউডের একজন সিঙ্গার, সুযোগ পেয়েছিলেন সুরকার হিমেশ রেশমিয়ার সাথে গান গাওয়ার, সূদুর মুম্বাইয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন। এ সমস্ত কিছুই সম্ভব হয়েছিল এই সোশ্যাল ওয়ার্কার এর জন্য ই।
আমাদের সমাজের বিভিন্ন মানুষ থাকে যাদের জন্য আজও এই পৃথিবীতে ভালো মানুষের সংজ্ঞা টা বজায় আছে, তেমনই একজন হলেন তাসলিমা মুহাম্মদ। তেলেঙ্গানার মূলুগু জেলার একজন বাসিন্দা, যিনি একজন সরকারি কর্মচারীও। তেলেঙ্গানার সাবরেজিস্ট্রার তাসলিমা, বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি সেই এলাকার ক্ষুধার্ত মানুষদের এবং বঞ্চিত লোকেদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি তার জীবনের একটা অংশ তাদের জন্য উৎসর্গ করেছেন, তাদের ক্ষুধা মেটাবার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেন তিনি।
এমনকি এই সমস্ত মানুষ যাদের দুবেলা খাবার ঠিকমতো জোটে না তাদের সাথে নিজের জীবনকে ভাগ করে নিয়েছেন। সরকারি কর্মচারী হলেও তার পাশাপাশি তিনি চাষবাস ও করেন। ওই কেন্দ্রে প্রবীণ সরকারি কর্মচারীরা তাদের কাছের জমিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন, তাদের দৈনিক মজুরি আড়াইশো টাকা এবং তারা ওই পাওয়াটা টাকার সাথে নিজেদের কিছু অর্থযোগ করে অন্য শ্রমিকদের মধ্যে বিতরণ করেন। বিগত দুবছর ধরে করোনার প্রকোপে মানুষের রুজি-রোজগার বন্ধ হওয়ার জোগাড়, পেটের ভাত জোগাতে মানুষ যখন হিমশিম, তখন এই তাসলিমা সেই সমস্ত বঞ্চিত শ্রমিকদের জন্য ব্যবস্থা করেছে, খাবার সরবরাহ করেছেন।
এমনকি শিশুর ফি পর্যন্ত তিনি দিয়েছেন পরিবারগুলোকে। একটি পত্রিকায় তসলিমার নিজস্ব বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছিল যেখানে তিনি বলেছিলেন যে, এই ধরনের সামাজিক কাজ তিনি তার বাবার কাছ থেকে শিখেছেন, কারণ ছোটবেলা থেকেই তিনি দেখেছেন দারিদ্র্যের সাহায্য করে এসেছেন তার বাবা। তবে বর্তমানে ৩৬ বছর বয়সী তসলিমা জৈব রসায়ন নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন এবং ২০১০ সালে তিনি সরকারি চাকরি পান।
তবে নিজে সরকারি চাকরি করে বলে কোনো কিছুরই অভাব নেই, তা নিয়েই সুখে স্বাচ্ছন্দে জীবনটা কাটাতে পারতেন , সেটি না করে তিনি যে এই সমস্ত দারিদ্র্যসীমার নিচে মানুষজনদের নিয়ে ভেবেছেন এটি অনেক বড় মাপের ব্যাপার, অনেক বড় মাপের মন থাকা দরকার, যা সবার টাকা পয়সা থাকলেই থাকেনা। এমন তসলিমা আমাদের সমাজে এখন অনেক বেশি প্রয়োজন কারণ এই সময়ে মানুষকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে, তবে আমরা খুব সহজেই এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে পারব।