মাঠে লাঙল দিয়ে চাষ করেছেন, অনেক লড়াই সংগ্রাম করে তিনি অলিম্পিকে পৌঁছে ছিলেন
মানুষের জীবন নানান ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়, সুখ দুঃখ কষ্ট আনন্দ সবকিছু মিলিয়ে মিশিয়ে একটি জীবন পরিপূর্ণতা পায়। কারোর জীবনে হয়তো দুঃখ কষ্ট কম থাকে , আবার কারো জীবনে হয়তো প্রতিকূলতাই বেশি থাকে। তাকে লড়াই করে বাঁচতে হয়, লড়াই করে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে হয়।
তেমনি জীবনের কোনো প্রতিকুলতাই যাকে থামাতে পারেনি সেই হলো মনোজ। উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপুর এর একজন দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন যিনি বর্তমানে টোকিও অলিম্পিকে টিকিট অর্জন করেছেন। শৈশব তার কেটেছে অত্যন্ত আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে, কোন এক ওষুধের ওভারডোজেই কারণে তার একটি পা অকেজো হয়ে যায়, যার ফলে সাইকেলের সাথে পাঙ্চার যুক্ত করে তাকে এগিয়ে যেতে হয়। তিনি অনেক ছোট ছোট কাজও করেছেন। যেমন বাড়িতে পিওপি তৈরীর কাজ, বলদ গাড়িতে মাটি ফেলা ইত্যাদি।
তবে তার ছোট থেকে ইচ্ছে ছিল একজন ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হবেন। যে কারণে তার ব্যাডমিন্টন খেলার প্রতি যথেষ্টই আগ্রহ ছিল,কিন্তু পায়ের দুর্বলতা কারণে তিনি এগিয়ে যেতে পারছিলেন না জীবনে, কিন্তু সে সময় তার এই অক্ষমতার পাশে এসে দাঁড়ান তার মা। মজুরি করে নিজের জমানো পয়সায় ছেলেকে ব্যাডমিন্টন কিনে দিয়েছিলেন। মায়ের এই উৎসাহ তাঁকে আরো এগিয়ে যেতে সাহস যুগিয়েছিল।
তারপর থেকেই মনোজ নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে শুরু করে। তার জন্য যা যা পরিশ্রম দরকার তিনি করতে শুরু করেছিলেন, নিজেকে মাঠে ঘন্টার পর ঘন্টা প্রাক্টিসে ব্যস্ত রাখতেন। যার ফলে তিনি একজন সুদক্ষ খেলোয়াড় হয়ে উঠেছিলেন। শুধুমাত্র সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। আর সে সুযোগও পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি, ২০১২ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত হয়েছিল একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। যে প্রতিযোগিতা তিনি সফল হয়েছিলেন। আর তাঁকে পেছনে ফিরে জীবনে তাকাতে হয়নি।
এখান থেকেই তার জীবনের ক্যারিয়ারের গ্রাফ বদলে গিয়েছিল , এখনো পর্যন্ত তিনি ৩০ টিরও বেশী দেশে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা খেলেছেন এবং প্রায় ৪৭ টি পদক অর্জন করেছেন। এবার আসন্ন টোকিও অলিম্পিকে তার কাছ থেকে আমাদের আরো উচ্চ প্রত্যাশা রয়েছে। আশা করি সে সমস্ত প্রত্যাশা থেকে নিরাশ করবেন না মনোজ। সেই দিকে আমাদের নজর থাকবে। ভারতের মুখ উজ্জ্বল করবে এবং আবারো প্রমান করবে ভারত ই জগতের শ্রেষ্ঠ। ভারতে এমন বহু প্রতিভার রয়েছে যারা বিশ্বের কাছে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।