পুলিশ অফিসার পিতার মৃত্যুর পর, সংগ্রাম করে IPS অফিসার হয়ে মায়ের স্বপ্ন পূরণ করেছে

পরিশ্রম মানুষের জীবনে সাফল্যের চাবিকাঠি, তা বার বারই প্রমাণিত হয়েছে, ঠিক যেমন সাফল্য পেয়েছেন রোহিত। ভারতের মধ্যে ৫৮২ রেঙ্ক করে আই পি এস অফিসার হওয়ার স্বপ্নে আরো একধাপ এগিয়ে গেলেন তিনি ।
বাবার দেখা স্বপ্নকে সার্থক করলেন রোহিত, তবে তাঁর এই সাফল্যের পেছনে যে ব্যক্তিটির কথা না বললেই নয় তিনি হলেন রোহিতের মা। তাঁর ভরসা তেই রোহিত মনে আরও সাহস ও জোর পান। প্রতিদিন তিনি ১৭ থেকে ১৮ ঘন্টা নিজের পড়াশুনার মধ্যে থাকতেন। তাঁর এই কঠোর পরিশ্রম তাঁর জীবনের সাফল্য এনে দিয়েছে। রোহিতের বাবা ছিলেন দিল্লি পুলিশের এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট রাজবীর সিং।
যিনি ২০০০ সালে ঘটে যাওয়া লাল দুর্গের সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত সন্ত্রাসবাদীদের ধরতে তার ভূমিকা যথেষ্ট ছিল। এমনকি ২০০১ সালে ঘটে যাওয়া পার্লামেন্ট আক্রমণ কাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদেরও উল্লেখযোগ্য শাস্তি দেন তিনি। তাই নিজের বন্ধুর গুলিতে শেষ পর্যন্ত নিহত হন তিনি। অকালে প্রাণ হারাতে হয় তাকে, সে ঘটনা শুনে যখন রোহিত ও তাঁর মা হাসপাতালে ছুটে যায়, কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছেই তাঁরা দেখেন শেষ রক্ষা হয়নি। দিনটি ছিল ২৪ শে মার্চ ২০০৮, একজন ১৬ বছর বয়সী ছেলের জীবনের সবথেকে দুঃখের দিন ছিল সেটি।
যেদিন ছেলেটি সহ পুরো পরিবার তার বাবার জন্য অপেক্ষায় ছিল কিন্তু হঠাৎই তাঁরা তাঁর বাবার এমন ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা কথা জানতে পারে অকালে ছেলেটি পিতৃহারাও হন। তবে পিতৃহারা হয়েও বাবার স্বপ্ন কে নিজের মনের মধ্যে গেঁথে রেখেছিল রোহিত। বাবার স্বপ্নকে সফল করার জন্য নিজে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন। দিনরাত এক করে দিয়েছিল সে, যার ফলশ্রুতি হিসেবে আমরা পেলাম রোহিতকে একজন আইপিএস অফিসার রূপে।
বর্তমানে তিনি দিল্লি পুলিশের অতিরিক্ত ডিসিপি, হায়দ্রাবাদ থেকে প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর তিনি দিল্লী ক্যাডার লাভ করেন। ইতিমধ্যেই পুলিশে যোগদানের পর থেকেই হত্যা, ডাকাতির মতো বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সমাধান করেছেন রোহিত। তাতে যথেষ্ট প্রশংসাও পেয়েছেন তিনি। এই সমস্ত ঘটনা আমাদের জীবনে নতুন করে বাঁচতে, স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করে, কারণ যে সময়ে রোহিত পিতৃহারা হয়েছিল তারপর থেকে তাঁর পারিবারিক দায়িত্ব তাঁর কাঁধে চাপে। মা-বোনের দায়িত্ব কাঁধে চেপে যায় তাঁর, কিন্তু তার পাশাপাশি নিজের স্বপ্নকে জাগিয়ে রেখেছিল নিজের মধ্যে।
এমনকি তাঁর মাও ছেলের শিক্ষার দিকে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ান । একজন মা ও তার নিজের কষ্ট দুঃখ ভুলে গিয়ে সন্তানের উজ্জল ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। এমন মাও যথেষ্ট এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে বইকি, তাদের থেকে অনেক কিছুই জীবনের শিক্ষালাভ করা যায়।