MBA তে ফেল, ৮০০০ টাকা দিয়ে চায়ের দোকান চালু করে আজ যেভাবে ৪ বছরে ৩ কোটি টাকার ব্যাবসায় পৌঁছে গেছে এই MBA চায়ে ওয়ালা

নিজের লক্ষ্য পূরণের পথে বহু বাধা আসে কিন্তু সেই সমস্ত বাধা কে দেখে ভয় পেয়ে পিছে না হেঁটে সামনে এগিয়ে যাওয়ার নামই হল জীবন।

আজ এমনই একজনের কথা আপনাদের বলব-

বিকম গ্রাজুয়েট হওয়ার পর প্রফুল্ল এমবিএর এন্ট্রান্স দেয়। কিন্তু কোনো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সে ভর্তি হতে পারে না। এই কারণে সে ভেঙে পড়ে। নিজের হীনমন্যতাকে কাটিয়ে ওঠার জন্য মাত্র 8000 টাকা দিয়ে সে ব্যবসা শুরু করে। আর মাত্র চার বছরে সেই ব্যবসা টার্নওভার তিন কোটি টাকা হয়ে যায়।

প্রফুল্ল নিজের বাবার থেকে এই 8000 টাকা ধার নেয় এবং চায়ের দোকান শুরু করে। সে দোকানের একটি অদ্ভুত নাম দেয় “বি.কম চায়বালা”।

প্রথম দিনই সে দেড়শ টাকা লাভ করে। এরপর 2019-20 তে তার তিন কোটি টাকার ব্যবসা হয়। প্রথমদিকে সে রাজনৈতিক রেলিতেও চা বিক্রি করত।

তার এই বিজনেস স্ট্র্যাটেজি মিডিয়াকে আকর্ষিত করে। এর ফলে সে আইআইএম আহমেদাবাদ থেকে বক্তৃতা দেওয়ার আমন্ত্রণ পায়। একসময় প্রফুল্ল আইআইএম আহমেদাবাদ এ পড়ার স্বপ্ন দেখেছিল। আজ সে সেখানেই প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকে।

প্রফুল্ল জানায় পড়াশোনা করা কালীন সে অ্যামওয়ের সেলসম্যানের কাজ করেছিল। যেখান থেকে সে মাসে 25000 টাকা বেতন পেত। এখানে এক বছর মত কাজ করার পর সে বুঝতে পারে এতে কোনো ভবিষ্যত নেই।

তারপর তার এক আত্মীয় এমবিএ এবং CAT-র ব্যাপারে জানায়, তখন থেকে প্রফুল্ল এমবিএ করার স্বপ্ন দেখে।

এমবিএ করার জন্য প্রথম ছয় মাসে স্পোকেন ইংলিশ এর ক্লাস করে। এরপর এমবিএ-তে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করলে সুযোগ পায় না।

পরের বছর আবার চেষ্টা করার কথা ভাবে। এই এক বছর মন দিয়ে পড়াশোনা করে সে। পরের বছর 82% নাম্বার পায়।

কিন্তু কোন ভাল ইনস্টিটিউটে এই নাম্বারে সুযোগ পাওয়া সহজ না। সে তার এই স্বপ্ন এখানেই শেষ করে দেয়। তার পরিবার তাকে যেকোনো একটা কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রেসার দিতে থাকে। কিন্তু সে তাতে রাজি হয় না।

এরপর সে আহমেদাবাদে চলে যায় এবং আইআইএম আহমেদাবাদে ভর্তি হওয়ার কথা ভাবে।

তার বিশ্বাস ছিল গুজরাট যে কোন রকম ব্যবসার জন্য আদর্শ জায়গা। খুব শীঘ্রই সে ম্যাকডোনাল্ডসে কাজ পেয়ে যায়।

সেখানে সে কাস্টমারদের খাবার সার্ভ ও টেবিল পরিষ্কার করত। এতে সে প্রতি ঘন্টা 32 টাকা করে পেতে। প্রতিদিন প্রায় 10-12 ঘন্টা কাজ করত সে এবং দিনে তার 300 থেকে 350 টাকা তার ইনকাম হত। এখান থেকে সে ব্যবসা করার রীতি-নীতি শেখা শুরু করে।

তারপর বাবার থেকে 8000 টাকা নিয়ে নিজের চায়ের ব্যবসা শুরু করে। প্রথম দিকে খুব একটা লাভ না হলেও একসময় লাভের মুখ দেখে সে।

সে বুঝে গেছিল শুধু চা বিক্রি করে অন্যান্য দোকানদারদের টক্কর দিতে পারবে না। তাই সে বিভিন্ন ধরনের চা এবং স্ন্যাকস রাখে। আজ সে একজন প্রতিষ্ঠিত বিজনেসম্যান।

এই প্রসঙ্গে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানাতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button