স্কুল জীবনে ইংলিশে ছিলেন দূর্বল ,তাকে নিয়ে চলতো উপহাস্য ! আজ যেভাবে IAS হয়ে দিলেন যোগ্য জবাব

যদি কোন কিছু করার ইচ্ছা থাকে, তবে যত বাধাই আসুক না কেন, তা সাফল্য লাভ করবেই। সবচেয়ে বড় উদাহরন হিসেবে আজ সমাজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে আই.এ.এস অফিসার সুরভী গৌতম। একটি ছোট গ্রাম থেকে আসা সুরভী, তার কঠোর পরিশ্রম এবং এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা শক্তির কারণে আজ সফল হয়েছে।
সুরভীর গল্পটি সমস্ত মেয়েকে এগিয়ে যেতে এবং কিছু করার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। সুরভী গৌতম, মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলার আমদাঙা গ্রামের বাসিন্দা। 2016 সালে ইউ.পি.এস.সি সিভিল সার্ভিস এর পরীক্ষার সর্বভারতীয় স্তরে 50 তম স্থান অর্জন করেছিলেন।
হিন্দি মিডিয়াম এর পড়ার কারণে সুরভী ইংরেজিতে একটু দুর্বল ছিল। ইংরেজিতে দুর্বল হওয়ার কারণে অনেক সময় কলেজের ছাত্ররা তাকে ঠাট্টা করতো, কিন্তু এই দুর্বলতা সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুরভী গৌতম শুরু থেকেই পড়াশোনায় ভালো ছিল।
হিন্দি মিডিয়ামে পড়া সত্ত্বেও তিনি দশম শ্রেণীতে 93.4 শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন এবং শুধু তাই নয় গণিত ও বিজ্ঞানের মতন কঠিন বিষয়ে 100 র মধ্যে 100 পেয়েছিল সুরভী। মেধা তালিকায় তার নাম উঠে আসে পরে দ্বাদশ শ্রেণীতে জ্বরের কারণে তাকে 15 দিনের জন্য 15 কিলোমিটার দূরে ডাক্তারের কাছে চেকআপের জন্য যেতে হয়।
এমন অবস্থাতেও, পড়ালেখায় মনোযোগ আরও বাড়িয়ে দ্বাদশ শ্রেণি পরীক্ষায় ভালো নম্বর নিয়ে পাশ করে। দ্বাদশ শ্রেণি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সুরভী রাজ্য এর ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষায় ভালো নাম্বার নিয়ে পাস করে ভোপালের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়েছিলেন।
সুরভী বলেন, কলেজে আসার পর তার জীবন অনেকটাই বদলে যায় কারণ, এখানকার বেশিরভাগ ছেলেমেয়ে ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল থেকে পড়াশোনা করত। হিন্দি মিডিয়ামে পড়ার কারণে, সুরভীর ইংরেজি খুব দুর্বল ছিল এই কারণে এখানকার শিক্ষার্থীরা তাকে ঠাট্টা করতো, যার কারণে সে ডিপ্রেশনে চলে গেছিল।
পড়ালেখায় মনোনিবেশ করার সময় তিনি তার ইংরেজিতে অনেক উন্নতি করেন। তিনি বলেছেন যে, ইংরেজিতে উন্নতি করার জন্য তার এমন অবস্থা ছিল যে, তিনি ঘুমের মধ্যে ইংরেজিতে কথা বলতেন। ইংরেজির উন্নতির জন্য প্রতিদিন 10 টি শব্দের অর্থ মুখস্থ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং এর অর্থ লিখতে শুরু করেন।
এর ফলস্বরূপ, তিনি প্রথম সেমিস্টারে টপ করেন। এরপর কলেজের চ্যান্সেলর তাকে পুরস্কারও দেন। ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ হওয়ার সাথে সাথে কলেজ প্লেসমেন্টের সময় সুরভী টি.সি.এস এ চাকরি পেয়ে যায়। এই চাকরিটা তার লক্ষ্য ছিল না, তিনি অন্য কিছু করতে চেয়েছিলেন।
তাই তিনি চাকরিতে যোগ দেননি। তারপর সুরভী ISRO, BARC, GTE, MPPSC, SAIL, FCI, SSC এবং দিল্লি পুলিশের মতন অনেক প্রতিযোগিতার পরীক্ষা দিয়েছেন এবং পরীক্ষায় ভালো নাম্বার নিয়ে পাস করেছেন। 2016 সালে তিনি আই.এ.এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
এই পরীক্ষায় তিনি সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এছাড়া 2016 সালে আই.এ.এস পরীক্ষা ক্র্যাক করেন এবং একজন আই.এ.এস অফিসার হন।