যেভাবে তিনি প্রাকৃতিক উপায়ে ঘর বানিয়েছে তাতে তার AC লাগবে না

মানুষের অদম্য ইচ্ছা শক্তি তাকে সাফল্যের উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করে। আজ আমরা তেমনই একজনের কথা বলব যিনি তার অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে আজ একজন সফল ব্যক্তিত্ব হয়েছে। আজ বলব এক দম্পতি জিতেন্দ্র এবং তার স্ত্রীর কথা। জিতেন্দ্রর আগাগোড়াই পুরনো জিনিস পুনরায় ব্যবহার করার শখ ছিল। একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার হওয়ার কারণে সে অনেক পুরনো ঐতিহ্যবাহী স্থান সংস্কার করেছেন এবং কয়েক বছর আগে একটি ধসে পড়া বিল্ডিংকে সংরক্ষণ করেছেন এবং সেটিকে একটি নতুন আইটি সেলে রূপান্তরিত করা হয়েছে তাদের দ্বারা।

এই দম্পতি হুবলিতে অবস্থিত তার আর্কিটেকচার ফার্ম “ইনফ্রাস্ট্রাকচার ওয়ান”-এর মাধ্যমে ক্লায়েন্টদের তার পরিষেবা প্রদান করেন। 15 বছরের ফার্মটি কর্ণাটক জুড়ে 200 টি প্রকল্প সম্পন্ন করেছে। তবে গত পাঁচ বছর ধরে তার মনোযোগ শুধু সবুজ বাড়ি নির্মাণে।

কিন্তু পরে তিনি অনুভব করেন যে গ্রীন বিল্ডিং এর ধারণাটি তার গ্রাহকদের ভালো বোঝার এবং সচেতনতার অভাবে হারিয়ে যেতে পারে।

তাই তিনি বলেন, “আমরা এমন অনেক ভবন তৈরি করেছি যেগুলিতে পুরনো পিলার, ইট এবং ভেঙে যাওয়া ভবনের পিলারের মত উপকরণ পুনঃব্যবহার করেছি। কিন্তু সবাই এটাকে খোলা মনে মেনে নিতে পারে না। বেশিরভাগ গ্রাহক মনে করেন যে তারা জীবনে একবার একটি বাড়ি তৈরি করবেন তাই তারা পুরনো সামগ্রী ব্যবহার করতে পছন্দ করেন না। কিন্তু তাদের ধারণাটি ভুল।

প্রায় 10 বছর আগে যখন জিতেন্দ্র তার নিজের বাড়ি তৈরি করেছিলেন তখন তিনি নিজের পছন্দ মতন বাড়ি তৈরি করেছিলেন। 2,500 বর্গফুট জমিতে তিনি একটি সুন্দর বাড়ি তৈরীর জন্য পুরোনো উপকরণগুলিকে পুনরায় ব্যবহার করেন। এইভাবে সামগ্রিক খরচ 40% বাঁচিয়েছিলেন।

এছাড়াও সবুজ নির্মাণ সামগ্রী যেমন ফেরো সিমেন্ট স্ল্যাব ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি স্টিলের ব্যবহার 80 শতাংশ কমাতে সক্ষম হন এবং এই উপাদানটি সিমেন্টের 60% ব্যবহারও বাঁচায়।

জিতেন্দ্র তার ঘর নির্মাণের জন্য চারপাশে বায়ু চলাচলের জন্য অনন্য কৌশল ব্যবহার করেছিলেন। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করলে ঘরে কোন এসির প্রয়োজন হবে না।

জিতেন্দ্র বলেছিলেন যে, দক্ষিণ এবং পশ্চিম দিকে দেওয়ালগুলি খুব বেশি সূর্যালোক শোষণ করে, যা পুরো বিল্ডিংকে ভিতর থেকে গরম করে তোলে। এটি এড়াতে তিনি বাঁশ ঝাড়ের দেওয়াল লাগিয়ে এসব দেওয়াল রক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন এবং এটি দেওয়ালে ছায়া ফেলে যার ফলে ঘর গরম হয়না। একটি বাড়ির অভ্যন্তরীণ অংশকে কমপক্ষে 2° ঠান্ডা রাখে।

জিতেন্দ্র ব্যাখ্যা করেছেন, কেন তিনি দেওয়াল প্লাস্টার করা থেকে বিরত ছিলেন। তিনি বলেন যে, “প্লাস্টার শুধুমাত্র সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি কোনোভাবেই বিল্ডিংয়ে কোন শক্তি প্রদান করেনা।

তার কথা শেষ করে তিনি বলেন, “আপনি যখন রান্নাঘরে যান, সেখানে উপস্থিত উপাদানগুলো দেখে আপনি ঠিক করেন যে, আপনি কি তৈরি করবেন। আমারা স্থাপত্যে একই পদ্ধতি অনুসরণ করি। আমাদের যা আছে তা কাজে লাগাতে হবে। সেইসাথে এই ভ্রান্ত ধারণাগুলিকে ভাঙতে হবে যে, নতুন উপকরণ ব্যবহার করলে ভালো ঘর তৈরি হয়। এমনকি এই উপকরণগুলি পুনঃ ব্যবহার করে সবচেয়ে সুন্দর বাড়িও তৈরি করা যেতে পারে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button