ভারতের সবথেকে শক্তিশালী মহিলাদের মধ্যে জায়গা পেলেন এই আশা কর্মী। তার আসল পরিচয় জানলে আপনি আপনি অবাক হবেন

আচ্ছা আপনাদের যদি জিজ্ঞাসা করা হয় ভারতের সবথেকে শক্তিশালী মহিলা কে তাহলে আপনাদের উত্তর কী হতে পারে? অনেক হয়তো নিজের প্রিয় অভিনেত্রীর কথা বলতে পারেন, আবার কেউ কেউ কোনো মহিলা রাজনীতিবিদের কথা বলতে পারেন, হয়তো কেউ বলতে পারেন কোনো বিজনেসওম্যানের নাম। কিন্তু আজ আমরা আপনাদের এমন একজন মহিলার কথা বলব যিনি ফোর্ব্স দ্বারা ভারতের সবথেকে শক্তিশালী মহিলাদের তালিকায় জায়গা পেয়েছেন।
তিনি আর কেউ নন বরং উড়িষ্যার এক আশা কর্মী। এই আশা কর্মী হলেন উড়িষ্যা রাজ্যের সুন্দরগড় জেলায় গত 15 বছর ধরে কাজ করা মতিলদা কুল্লু। ফোর্ব্স ইন্ডিয়া W-Power 2021 এর এই তালিকায় অ্যামাজন প্রাইমের হেড অপর্ণা পুরোহিত আর সেল্স ফোর্স ইন্ডিয়ার CEO অরুন্ধতী ভট্টাচার্য জায়গা পেয়েছেন। 45 বছরের আদিবাসী মহিলা মতিলদা কুল্লু ফোর্ব্স ইন্ডিয়া মহিলা সশক্তিকরণ এর তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন।
আমরা মতিলদা কুল্লুর কথা এই কারণে বলছি কারণ তিনি একজন সাধারন আশা কর্মী। কোনো বিজনেসওম্যান বা রাজনৈতিক নেত্রী নন। মতিলদা নিজের জীবনে অনেক সংঘর্ষ করেছেন। এক সময় ছিল যখন তার কথার সবাই মজা করত। কিন্তু সময় বদলালো, আজ তাকে বহু মানুষ সম্মান করে। একটি মিডিয়া রিপোর্ট থেকে জানা যায় মতিলদা ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠেন। এরপর নিজের গবাদিপশু ও পোষ্যদের খেতে দেন। তারপর বাড়ির সব কাজ করেন।
এই সব কাজ শেষ হওয়ার পর সাইকেল করে গ্রামের প্রতিটি অলিতে-গলিতে যান এবং মানুষের সাহায্য করেন। তাদের সাথে কথা বলেন। তিনি গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে বাচ্চাদের দেখে আসেন, কিশোর-কিশোরী ও বয়স্কদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজও তিনি করেন। এছাড়াও গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্যের দিকেও তার নজর, নবজাতক শিশুর টিকা সহ অন্যান্য জানকারি তিনি নেন। তার এই সকল কাজের জন্য গ্রামের প্রতিটি মানুষ তাকে খুব সম্মান করে। মতিলদা একটি ইন্টারভিউ তে জানান আগে এই গ্রামের কেউ শরীর খারাপ হলে হাসপাতালে যেত না।
এমনকি তাদের হাসপাতালে যাওয়ার কথা বললে সকলে তার ওপর হাসত। কিন্তু ধীরে ধীরে বেশিরভাগ মানুষই মতিলদা-র কথা বুঝতে পারে আর এখন সকলেই শরীর খারাপ হলে চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে যায়। এই মহামারী শুরু হওয়ার সময় থেকে রোজ 50 থেকে 60 জন মানুষের টেস্ট তিনি করে থাকেন। তবে তার কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল গ্রামের মানুষদের ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য রাজি করানো। আর এই চ্যালেঞ্জে তিনি পাস করেন। মতিলদা-র মতো আশা কর্মীদের আমরা সম্মান জানাই।