বিশ্বের সব থেকে ধনী মন্দির পদ্মনাভস্বামী মন্দির, সম্পদ পাহারা দেয় নাগরাজ!

ভারতের পুরীতে জগন্নাথ মন্দিরের সম্পত্তির খতিয়ান শুনে অবাক হন অনেকেই। মন্দিরের সম্পদ যে এতো হতে পারে তা ভাবতেই অন্যরকম লাগে। এই মন্দিরের সাতটি গুপ্ত কক্ষ রয়েছে যেখানে স্বর্ণ-মণি-মুক্তায় ঠাসা! বিশ্বের ধনী মন্দিরের তালিকায় এই জগন্নাথ মন্দির রয়েছে সপ্তম স্থানে।

তাহলে নাম্বার ওয়ান ধনী মন্দির কোনটি? এটিও অবস্থিত ভারতে। দক্ষিণ ভারতের কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের ‘পদ্মনাভস্বামী মন্দির’ নামেই পরিচিত এটি। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মন্দিরের তকমা এ মন্দিরের দখলে। এই মন্দিরে স্বর্ণের গয়না, হীরের হার, মণি-মুক্তার এক বিশাল সম্ভার রয়েছে মন্দিরের এক গুপ্ত ঘরে; যেখানে মানুষ প্রবেশ করতে পারে না। কারণ এ সম্পদ পাহারা দেয় স্বয়ং নাগরাজ। এমন কথাই প্রচলিত রয়েছে এখানকার মানুষের মুখে মুখে।

পদ্মনাভস্বামী মন্দির ভগবান বিষ্ণুর অনন্তশয্যার মূর্তি রয়েছে এই মন্দিরে। জানা যায়, ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের কাছে এক পিটিশন দায়ের করেন আইপিএস অফিসার টি পি সুন্দরাজন। মন্দিরের সম্পত্তির হিসাবনিকেশ যাতে নথিভুক্ত করা হয়। সাত জনের একটি দল নিযুক্ত করা হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে।

আধিকারিকরা তাদের কাজ শুরু করতে গিয়ে সন্ধান পান ছ’টি গুপ্ত কক্ষের। লোহার দরজার পিছনে সেই ‘কাল্লারা’ বা ভল্টগুলোকে চিহ্নিত করা হয় ইংরেজি হরফের এ থেকে এফ দিয়ে।

অনেক কসরতের পর পাঁচটি ভল্ট খুলতে পারলেও, কাল্লারা বি খোলা যায়নি। মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়, কোনও এক সময়ে মুনি-ঋষিরা যজ্ঞ করে ‘নাগ পাশ’ মন্ত্র দিয়ে এই কক্ষ বন্ধ করে দিয়েছিলেন এবং এই দরজা খোলা যাবে শুধু ‘গুরুর মন্ত্র’ উচ্চারণেই। প্রসঙ্গত, কাল্লারা বি-এর দরজায় রয়েছে সাপের প্রতিকৃতও।

মন্দিরের পূজারী ও শাস্ত্রজ্ঞদের মতে, এই দরজা খুললে প্রাণ সংশয় হতে পারে। পাশাপাশি রাজ্যের ওপর তা বয়ে আনতে পারে সাংঘাতিক খারাপ সময়।

জানা যায়, কাজ শুরুর আগেই হঠাৎ করে মারা যান পিটিশনার টি পি সুন্দরাজন। তার পরে বেরিয়ে আসে আরও এক কাহিনি— কোনও এক সময় এই মন্দির লুঠ করতে আসে থাম্পি রাজার সেনারা। কিন্তু, কাল্লারা বি-এর কাছে আসতেই নাকি তাদের তাড়া করে হাজার হাজার সাপ।

পদ্মনাভস্বামী মন্দির দেখভালের দায়িত্ব কেরলের রাজবংশের। বর্তমানে রাজকুমারি অশ্বথি থিরুনাল গৌরী লক্ষ্মী বাঈ সেই গুরুভার পালন করছেন। তিনি জানিয়েছেন, কাল্লারা বি-এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে দুটি ছোট ঘর, যা শেষবার খোলা হয়েছিল ২০১১ সালে। তবে তার ভেতরে ঢোকার সাহস করেননি কেউই।

এর আগে ২০১৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাকি ভল্টের সম্পত্তির তালিকা তৈরি হলেও, এখন পর্যন্ত তালা কাল্লারা বি ও তার আনুসঙ্গিক জি ও এইচ নম্বর কক্ষ বন্ধই রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button