বাবা একজন ঝালাই মিস্ত্রি, ছেলে পেয়েছে কোটি টাকা বেতনের চাকরি, পুরোটা পড়লে চোখে জল ধরে রাখতে পারবেন না।

জীবনে হাজারো রকমের প্রতিকূলতা। দুবেলা-দুমুঠো খাবার না জুটলেও বা পরনে একটা ভালো দামি পোশাক না থাকলেও ধার দেনা করে পড়াশোনা চালিয়েছেন তিনি। হিন্দি মিডিয়ামে পড়াশোনা করেছেন এই ব্যক্তি। তার নাম বাৎসল্য চৌহান। বর্তমানে তার বার্ষিক বেতন ১.০২ কোটি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। ২১ বছরের বাৎসল্য ভারতের বিহার রাজ্যের খাগারিয়া জেলার ছেলে।

আইটি খড়গপুরের শেষ বর্ষের ছাত্র তিনি। বাবা ঝালাই দোকানের কর্মচারী, মা গৃহবধূ। ছয় ভাইবোনের সংসারে প্রচণ্ড অভাবের মধ্যে দিয়ে সংগ্রাম চালিয়ে আজ উন্নতির শিখরে পৌঁছেছেন বাৎসল্য। ২০১১ সালের ১২ পরীক্ষায় ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে তিনি আইআইটি তোড়জোড় শুরু করেন তার জন্য বিশেষ কোচিং নেন এবং সফল হন তিনি। IIT-JEE এ তার র‌্যংক অল ইন্ডিয়ায় ৩৮২ হয়।

খড়গপুর আইআইটি তে কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। গত ডিসেম্বরে ক্যাম্পাস প্লেসমেন্টের সময় মাইক্রোসফট তাকে ১.০২ কোটির চাকরির অফার করে। বাৎসল্য জানান, বি-টে-ক শেষ করে তিনি চাকরিতে যোগ দেবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে এই অক্টোবরে তার চাকরিতে যোগদান করার কথা। তার বাবা চন্দ্রকান্ত সিং চৌহান বলেন, ছেলের পড়াশোনার জন্য আমরা একটি ঋণ নিয়েছিলাম। এখন ভালো লাগছে সে এত বড় একটি চাকরি পেয়েছে সে।

রাজস্থানের কোটায় আইআইটি কোচিং এর জন্য ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তার বাবা। সাক্ষাৎকারের নিজের জীবনের কথা বলতে গিয়ে একটি আতঙ্কের কথা জানায় বাৎসল্য। এখনো তার মনে পড়ে, ভোর চারটের সময় ছিল ইন্টারভিউ। আগের দিন অনেক রাত পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা হয়েছে। একবারের জন্যও দুচোখের পাতা এক করতে পারেননি। তবুও পরের দিন পরীক্ষা দিয়েছেন।

সাফল্যের মূল রহস্য সম্পর্কে বাৎসল্য বলেছেন, পরিকল্পনামাফিক পড়াশোনা না করলে এগোনো অনেক মুশকিল। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে রাজস্থানের কোটায় গিয়েছিলাম কোচিং করতে। ভালো লাগেনি বলে মাঝপথে সব ছেড়ে চলে এসেছিলেন। তখন আমি আইআইটির প্রবেশিকায় বসেছিলাম। মনে হয়েছিল আমি পারবো। তারপরে আবার পরীক্ষায় বসি এবং র‌্যাংক করে ফেলি। প্রথম বারের তুলনায় দ্বিতীয় বার তার পরীক্ষার ফল ভালো হয়েছিল। ২০১২ সালে দ্বিতীয় বার পরীক্ষায় বসেন। তারপর থেকে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button