বন্ধুরা উপাস্য করেছিলো, মৃ-ত্যুশয্যায় থেকেও কঠিন রোগের সাথে লড়াই করে আজ তিনি যেভাবে IAS অফিসার হলেন

ভাগ্যের লেখাও কখনো বদলায় না। তবে এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যেতে পারে যে, কখনও কখনও ভাগ্য নিজেই বলে, “পরিশ্রম করো এবং আমার লেখাকে মিথ্যে প্রমাণ করো।” একজন ব্যক্তি তার আবেগ দিয়ে সবচেয়ে কঠিন লক্ষ্য অর্জন করতে পারে। যদি তার লক্ষ্য দৃঢ় হয় তাহলে যে কোনো ব্যক্তি তার লক্ষ্য জয় করবে।

আই.এ.এস অফিসার নবজীবন পাওয়ার এই বিষয়টি প্রমাণ করেছেন। মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার নাভিবেজ গ্রামে জন্ম নেওয়া নবজীবনের বাবা একজন কৃষক এবং মা একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পড়াশোনা শেষ করার পর নবজীবন ইউ.পি.এস.সি প্রস্তুতি নিতে দিল্লি চলে যান।

ইউ.পি.এস.সি প্রিলিমিনারি পরীক্ষা 3রা জুন 2018 এ অনুষ্ঠিত হয়েছিল যেটি তিনি তার প্রথম প্রচেষ্টায় ক্লিয়ার করেছেন। নবজীবনের পক্ষে লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ ছিল না কারণ, একের পর এক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে। তার মনে হচ্ছিল কেউ তাকে এগিয়ে যেতে বাধা দিচ্ছে। কখনো তিনি ডেঙ্গু এবং ডায়রিয়ার দ্বারা আক্রান্ত হন, আবার কখনও তাকে কুকুরে কামড়েছে। মাঝে মাঝে তার ফোন হারিয়ে গেছে।

তাই তার হাতের দিকে তাকিয়ে জ্যোতিষী বলেছিলেন যে, 27 বছর বয়স পর্যন্ত তিনি আই.এ.এস হতে পারবেন না। যদিও নবজীবন তার হাতের রেখায় বিশ্বাস করতেন না, তিনি কেবল তার কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন এবং এগিয়ে যেতে থাকেন। ইউ.পি.এস.সি-র মেন পরীক্ষার 28 দিন আগে নবজীবনের ডেঙ্গু হয় এবং অবস্থার অবনতি হতে দেখে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং দিল্লির হাসপাতালে তাঁর অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি এবং এমন পরিস্থিতিতে নিজের বাড়িতে চলে যান নবজীবন।

সেখানেই তার আবার চিকিৎসা শুরু হয় এবং পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে তাকে আই.সি.ইউ-তে ভর্তি করতে হয় এবং সেইসব ঘটেছিল যখন তার মূল পরীক্ষার মাত্র 26 দিন বাকি ছিল। এই অবস্থায় তার বাবা আই.সি.ইউ-তে ভর্তি নবজীবন কে
বলেছিলেন যে, এখন তার সামনে দুটি পথ, হয় তাকে কাঁদতে হবে অথবা তাঁকে লড়াই করতে হবে এবং নবজীবন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি লড়বেন।

এরপরে ডাক্তার অবাক হয়ে নবজীবন কি করেন তা দেখতে থাকেন। আই.সি.ইউ-তে ভর্তি নবজীবনের একহাতে ওষুধের বোতল এবং অন্যহাতে ইউ.পি.এস.সি-র বই। পাশে পড়ে থাকা বইগুলোর দিকে তাকিয়ে ডাক্তার বলেন, “পরীক্ষার থেকে জীবন বড়, আপনি এখন পরীক্ষা দিতে পারবেন না।” কিন্তু নবজীবন রাজি হননি এবং হাসপাতালেই পড়া চালিয়ে যেতে থাকেন।

নবজীবন রোগ থেকে সেরে ওঠে এবং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। তিনি যে সমস্ত কষ্ট ভোগ করেছিলেন তার উত্তর তিনি পরীক্ষার মাধ্যমে দিয়েছেন এবং তার প্রথম প্রচেষ্টায় তিনি ইউ.পি.এস.সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং নবজীবন বিজয় পাওয়ার ইউ.পি.এস.সি 2018তে অল ইন্ডিয়া 360 তম র‍্যাংক পেয়ে আই.এ.এস হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button