প্রেমের টানে প্রেমিকাকে ফেরাতে তন্ত্র-মন্ত্রের সাহায্য নিয়ে ৪৩ লাখ টাকা খুইয়ে মাথায় হাত যুবকের

প্রেমে যে মানুষ শুধুমাত্র অন্ধ নয়, দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে যান, তার প্রমাণ অনেকবার আমরা পেয়েছি।আরো একবার এই রকম একটি ঘটনা উঠে এলো সকলের সামনে। গুজরাটের ব্যবসায়ী অজয় প্যাটেল তার প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়াতে ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। যে কোনো মূল্যে সম্পর্ক জোড়া লাগানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। প্রেমিকার কাছে বহুবার ক্ষমা চাইলেও কোনভাবেই সেই সম্পর্ক ঠিক হচ্ছিল না। অবশেষে তন্ত্র-মন্ত্রের আশ্রয় নিলেন যুবক। সেটাই কাল হলো।
অজয়ের থেকে ৪৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে চম্পট দিল ওই তান্ত্রিক। মাসের পর মাস ওই তান্ত্রিক এর সঙ্গে শলা-পরামর্শ করেছিলেন অজয় বাবু। যেকোনো মূল্যে তিনি তার প্রেমিকাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সুযোগে অল্প অল্প করে তার থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ওই তান্ত্রিক।
পুলিশ সূত্রে খবর পাওয়া গেছে, গুজরাটের মাকারভা এলাকায় ইলেকট্রিক সরঞ্জামের দোকান রয়েছে অজয় বাবুর। আচমকা সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। এক বন্ধু অনিল যোশী নামে ওই তান্ত্রিক এর সন্ধান দিয়েছেন তাকে। বশীকরণের নামে অজয় এর কাছ থেকে আস্তে আস্তে টাকা নিতে শুরু করে ওই তান্ত্রিক।
প্রথমবার ১১ হাজার ৪০০ টাকা নিয়েছিলেন ওই তান্ত্রিক। এবার আস্তে আস্তে অল্প অল্প করে টাকা নিতে নিতে ৪৩ লক্ষ টাকা নিয়ে নেন তার থেকে। অবশেষে যখন কোনো সুরাহা পাওয়া যায় না তখন অজয় বাবু ওই তান্ত্রিকের থেকে টাকা ফেরত চান। টাকা দিতে অস্বীকার করেন ওই ব্যক্তি এবং তারপর সেখান থেকে পালিয়ে যান।
প্রতারিত ব্যক্তি পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ করে বলেন, তথ্য প্রমান সহ সবকিছু পুলিশের কাছে জমা দিয়ে এসেছেন তিনি। প্রায় চার শর বেশি অডিও রেকর্ডিং জমা দিয়েছেন তিনি পুলিশের কাছে। এই অডিও রেকর্ডিং এ সমস্ত কথা বার্তা তার প্রমান পত্র রয়েছে। কত টাকা ওই তান্ত্রিক নিয়েছেন তার প্রমাণও রয়েছে ওই অডিও তে। তবে পুলিশ এখনো কোনো এফআইআর করেননি।
অজয় বাবু দাবি জানিয়েছেন, তান্ত্রিকের স্ত্রী এবং অন্যান্য গুরু এই প্রতারণার সাথে যুক্ত রয়েছেন। ওই তান্ত্রিক একাধিকবার হুমকিও দিয়েছিলেন তাকে। শুধুমাত্র প্রেমের সমস্যা মেটানোর জন্য নয়, পারিবারিক সমস্যা মেটানোর জন্য ওই তান্ত্রিকের কাছে প্রত্যেকদিন যেতেন অজয় বাবু। অজয় বাবুর বাবার ক্যান্সার রয়েছে। বাড়িতে ছোট দুই বোন রয়েছে।
ওই তান্ত্রিক অজয় বাবুকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তার দুই বোনের সু পাত্রের হাতে বিয়ে হয়ে যাবে। শেষের দিকে অজয় বাবুকে তিনি জানান, তার বাড়ির নিচে সিন্দুক ভর্তে সোনা রয়েছে। শেষে যখন অজয় বাবু আসল ঘটনা বুঝতে শুরু করেন তখন তান্ত্রিক তাকে সাথে শুরু করেন এবং অবশেষে সমস্ত টাকা নিয়ে চম্পার দিয়ে দেয়।