পুড়ে যাওয়ার কারণে মেয়েটির হাত পা কেটে ফেলতে হয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও হবু বর বলেন যে ” আমি বিবাহ করবো এবং সারাটা জীবন পাশে থাকব…”

এটা বলা হয়ে থাকে যে বিবাহের সাত পাক ব্যক্তিকে সাত জন্মের বন্ধনে বেঁধে ফেলে। এটি কোন কাল্পনিক কথা নয় বরং এটি একটি সত্য কথা, জীবনে যতই কষ্ট আসুক না কেন, সুখ দুঃখ প্রতিটি মুহূর্তে স্বামী স্ত্রী একে অপরের সাথে থাকে। কিন্তু আমরা আজকে আপনাকে এমন এক ঘটনা বলতে যাচ্ছি যেটি কিনা সম্পূর্ণ আলাদা। আপনার হয়তো মনে হতে পারে এটি বাস্তবে হয় না এটি সিনেমা জগতেই সম্ভব, পুড়ে যাওয়ার কারণে মেয়েটির হাত পা কাটতে হবে, চলুন জেনে ফেলি সম্পূর্ণ ঘটনাটি কি?
পুড়ে যাওয়ার কারণে কেটে ফেলতে হবে মেয়েটির হাত এবং পা:-এই ঘটনাটি হল হিরল নামক একটি মেয়ের এবং চিরাগ নামক একটি ছেলের, যারা বুঝিয়ে দেন ভালোবাসা একটি মানুষকে যেমন ভালো করে তুলতে পারে আবার খারাপও করে তুলতে পারে। জামনগর জেলার ডাবাসন গ্রামের বাসিন্দা ১৮ বছরের হিরল তানসুখ ভাদার বারগামা তে থাকে এবং তার বিবাহ ২৮ শে মার্চ জামনগরের চিরাগ ভারেশিয়া গাজ্জারের সাথে ঠিক হয়েছিল। গরমের ছুটিতে তাদের বিবাহের তারিখ নিশ্চিত হয়েছিল কিন্তু নিয়তির এটা মঞ্জুর ছিল না।
১১ ই মে হিরল কাপড় ধুয়ে শুকানোর জন্য জানলার কাছে পৌঁছায় এবং যখনি সে হাত বাইরে বার করেন ঠিক সেই সময় ইন্টেনশন তারে তার হাত চলে যায় এবং তৎক্ষণাৎ তার হাত জ্বলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তার হাত এবং পায়ের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হয় এবং সে পুড়ে যায়। হিরলকে তৎক্ষণাৎ পার্শ্ববর্তী জিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তার চিকিৎসা করা হয়। পরিবারজনদের মনে হয় হাসপাতালের লোকেরা তাদের কাছে কিছু লুকিয়ে রাখছে, বারবার জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও বলা হয় যে রিপোর্ট ভালো আছে,খুব শীঘ্রই ঠিক হয়ে যাবে। ৪ দিন পর ডাক্তাররা আত্মসমর্পণ করে দেন এবং তাকে আমেদাবাদের সিভিল হাসপাতালে রেফার করে দেন।
ওখানে ডাক্তাররা বলেন যে হিরলের ডান হাত এবং দুটি পায়ের হাঁটু কেটে বাদ দিতে হবে। যদি দুর্ঘটনার ৪৮ ঘন্টা বাদেই তাকে এখানে নিয়ে আসা হতো তবে পরিস্থিতি আজ অন্য কিছু হত। এই সম্বন্ধে হিরলের হবু বর চিরাগ মিডিয়াকে বলেন। যখন হিরলের মাতা পিতা জানতে পারেন যে তার ডান হাত এবং দুটি পা কাটতে হবে তখন তারা হতাশ হয়ে পড়ে। এখন তাদের মেয়েকে কে বিয়ে করবে? হিরলের বাকিটা জীবন কেমন ভাবে কাটবে? এই সমস্ত কথার মধ্য দিয়ে তার বাবা-মা চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়। যখন চিরাগ হাসপাতালে আসে এবং হিরলের বাবা মাকে চিন্তার মধ্যে দেখে তখন সে বলে যে সে হিরল কে বিয়ে করবে। চিরাগের সিদ্ধান্তের সমর্থন চিরাগ এর বাবা মা ও করেন
হিরল সাংবাদিকদের তার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন:-হিরল সাংবাদিকদের বলেন যে “৩-৪ দিন পর্যন্ত আমার কোন জ্ঞান ছিল না এবং যখন জ্ঞান আসে তখন বুঝতে পারলাম যে আমার হাত পা কেটে ফেলা হবে, আমি ভেঙে পড়ি এবং পরিবারের কাছে মৃত্যু চাই, কিন্তু চিরাগের সিদ্ধান্ত জানার পর মনে হয়েছে এখনো পৃথিবীতে ভালো মানুষ আছে, আমি চিরাগের প্রতি গর্বিত এবং হাসপাতালে চিরাগ আমার সাথে ছিলেন সবসময়। তিনি হাসপাতালে আমার সাথে একই সাথে থাকেন যাতে তিনি আমার সেবা যত্ন করতে পারে, চিরাগের মাতা পিতা আমাকে এই অবস্থায় স্বীকার করছে এটা আমার সৌভাগ্য” হিরলের এই খবর সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং চিরাগের এই সিদ্ধান্তকে সবাই সেলাম জানাচ্ছে।
আপনাদের আমরা জানাতে চাই এই ঘটনাটি ২ বছর আগের। আমাদের সমাজে প্রত্যেকদিন আমাদের আসে পাশে এমন সব নেগেটিভ ঘটনা ঘটছে তারমধ্যে থেকে এমন পজেটিভ ঘটনার মাধ্যমে সমাজের মানুষকে অনুপ্রেরণা জাগাতে নতুন করে এই প্রতিবেদন পরিবেশন করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে লাইক শেয়ার করবে।
ছেলেটি খুবি ভালো