নিজের হাতে করে ৬৬ বছরের বাবার বিয়ে দিলো ছেলে! নতুন মা পেয়ে খুশির হাওয়া গোটা পরিবারে

আমাদের দেশ আস্তে আস্তে কুসংস্কার থেকে মুক্ত হচ্ছে তা কিছু ঘটনা থেকে বোঝা যায়। কিছু ঘটনা এমন হয় যা আমাদের মনকে ভালো করে দেয়। কিছু ঘটনা চিরকাল শিক্ষণীয় হয়ে থাকে সকলের মাঝখানে। এমনই একটি ঘটনা ঘটে গেল কিছুদিন আগে। মা মারা গেছেন দশ বছর হয়ে গেছে। ছেলে থাকে বাইরে।
বাড়িতে একা দিন কাটান বাবা। কিন্তু মৃত মানুষের স্মৃতি আগলে ধরে আর কতদিন বেঁচে থাকা যায়। তাই বাবাকে নতুন একটি জীবন উপহার দিল ছেলে। যদিও জীবনসঙ্গী হিসেবে যাকে বেছে নিয়েছেন বাবা, তাতে ইচ্ছা করলেই আপত্তি জানাতে পারতো ছেলে। কিন্তু নিজের কথা না ভেবে বাবার সুখের কথা চিন্তা করেছে ছেলে।
সোশ্যাল মিডিয়া দরবারে এই খবর আসার পর রীতিমতো প্রশংসার বন্যা বয়ে গেছে। বরের নাম তরুণ কান্তি পাল, বয়স ৬৬। বউয়ের নাম স্বপ্না রায়, বয়স ৬৩। গত ২৫ নভেম্বর তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এবার আসি তাদের ভালোবাসার গল্প তে। দুজনের পরিবার আগে থেকেই পূর্ব পরিচিত ছিলেন। ভট্টনগর গ্রামে থাকতেন তারা। কিন্তু নবদম্পতির আগে কখনো সাক্ষাৎ হয়নি।
তাহলে কি করে হলো প্রেম ভালোবাসা? ছেলে সোশ্যাল মিডিয়াতে জানিয়েছেন যে, বছর দুই আগে বাবা অবসর নিয়েছিলেন। এরপর ভট্টনগর রামকৃষ্ণ মঠে তিনি নিয়মিত যেতেন। সেখানেই আসতেন স্বপ্না দেবী। সারদা মায়ের জন্ম তিথিতে দুজনের প্রথম আলাপ হয়েছিল। এরপর মাঝে মাঝে দেখা হতো তাদের। তারপর যা হয়, ফোন নাম্বার এক্সচেঞ্জ থেকে কথা বলা সব কিছুই হয় আস্তে আস্তে।
এরপর ধীরে ধীরে সম্পর্ক গভীর ভাবে তৈরি হয়। স্বপ্না রায় নিজের ভালোবাসা জানান তরুণ কান্তি বাবুকে। সেই ভালবাসার কথাতে সম্মতি জানান তরুণ বাবু। এরপর তারা ছেলেদের মত নেন। ছেলে সায়ন থাকে কানাডাতে। বাবা এখানে একা থাকেন। তাই বাবার বিয়েতে খুবই খুশি হয়েছে ছেলে।
তরুণ কান্তি পাল indianexpress.com কে জানিয়েছেন যে, “জীবন একটি দীর্ঘ যাত্রা ছাড়া কিছুই নয়। এই যাত্রাতে কাউকে সঙ্গে করে আমাদের নিয়ে যেতে হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে যদি কোন সঙ্গী আমাদের ছেড়ে চলে যায়, তাহলে আমাদের একলা সেই পথ চলতে হয়। তবে কোনো কোনো সময় অসমাপ্ত যাত্রায় যদি কাউকে পাশে পাওয়া যায়, তাহলে বাকি জীবন আরো সুখময় হয়ে ওঠে।।”