ক-রোনা কালে নিজের জীবন বাজী রেখে চীনে আটকে পড়া ভারতবাসীকে উদ্ধার করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ভারত কন্যা লক্ষী

আমরা বাস করি পুরুষতান্ত্রিক সমাজে। তাই যখনই কোন মেয়ে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছে তার কেটে দেওয়া হয়েছে ডানা। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। আজ মেয়েরা নিজেদের ডানার রক্ষা নিজেরাই করতে পারে। আজ আমরা আপনাদের এক মহিলা পাইলট লক্ষ্মী যোশীর কথা বলব।
লক্ষী যোশী মুম্বাইয়ের বাসিন্দা। মাত্র আট বছর বয়সে প্রথমবার বাবার সাথে প্লেনে চড়ে ছিলেন তিনি। সেদিন থেকেই তার ছোট্ট মনে দানা বেধে গেছিলো আবার আকাশে ওড়ার স্বপ্ন। এবার যাত্রী হয়ে নয় বরং প্লেনের পাইলট হয়ে ওড়ার স্বপ্ন ছিল তার। আর এই স্বপ্ন পূরণ করতেই দীর্ঘ দুই বছর কঠোর পরিশ্রম ও ট্রেনিং এর পর পাইলট হন তিনি এবং চাকরি পান এয়ার ইন্ডিয়া তে।
সালটা ছিল 2020। মনে পড়ে কি কঠিন সময়টা ছিল! প্রায় প্রতিটি দেশই নিজেদের দেশে প্লেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। এই কারণে ভারতের বহু নাগরিক বিভিন্ন দেশে আটকে পড়েছিলেন। আর সেই সমস্ত নাগরিকদের উদ্ধার করতে ভারত সরকার চালু করে “বন্দে ভারত মিশন”।
এই প্রকল্পে অন্যান্যদের সাথে যুক্ত ছিলেন লক্ষ্মীও। তাকে তিনবার এই মিশনের জন্য অন্যান্য দেশে যেতে হয়েছিল। সর্বপ্রথম তাকে যেতে হয়েছিল কো’রো’নার আঁতুড়ঘর চীনের সাংহাইতে। প্রথম দিকে তার বাবা-মা ভয় পেলেও, ভরসা জুগিয়েছিলেন তারাই। এই দীর্ঘ পথ তাকে হ্যাজম্যাট সুট পরে থাকতে হয়েছিল।
প্লেন ভারতের মাটি স্পর্শ করার পরই একটি বাচ্চা মেয়ে ছুটে এসে তাকে জানিয়েছিলেন বড় হয়ে সেও হতে চায় লক্ষ্মীর মত। এটি লক্ষ্মী যোশীর কাছে ছিল অনেক বড় পাওনা। বাচ্চা মেয়েটির কথা শুনে হ্যাজম্যাট সুট পরে এতক্ষণ প্লেন চালানোর সকল ক্লান্তি এক নিমিষেই উধাও হয়ে গেছিল তার।
তথাকথিত বিয়ের বয়স হয়ে যাওয়ার পরেও বিয়ে না করার কারণে পাড়া-প্রতিবেশি ও আত্মীয়-স্বজনরা বহু কথা বলেছেন তার বাবা-মাকে। কিন্তু প্রত্যেকবারই হাসিমুখে উত্তর দিয়েছেন তারা। আজ এই লক্ষ্মী যোশী শুধুমাত্র তার বাবা-মায়ের নয় বরং ভারতের বীরকন্যা।