কঠিন সময়ে হাল না ছেড়ে ডিম বিক্রি করে পড়াশোনা খরচ চালিয়ে আজ তিনি যেভাবে IAS অফিসার

সফল হতে গেলে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। এই প্রবাদটিকে সত্যি করে দিয়েছেন বিহারের মনোজ কুমার। নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে সকল সমস্যার সম্মুখীন সাহসিকতার সাথে করেছেন তিনি। ডিম ও সবজি বিক্রেতা মনোজ কুমার পরিশ্রমের মাধ্যমে পঞ্চম প্রয়াসে ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হয়েছেন। একটি হিন্দি খবরের কাগজ কে ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় তিনি জানান- ছোট থেকেই তাকে শুনতে হয়েছে শিক্ষিত হওয়ার থেকে বেশি ইম্পর্টেন্ট টাকা রোজগার করা।

তাই যেন তিনি পড়াশোনার পেছনে দৌঁড়ানোর বদলে টাকার পিছনে দৌড়ান। এই কারণে দ্বাদশ শ্রেণী পাস করার পর মনোজ চাকরির খোঁজে বিহার থেকে দিল্লি চলে যান। কিন্তু বহু চেষ্টার পরেও চাকরি জোগাড় করতে অসমর্থ হন মনোজ। তাই তিনি টাকা রোজগার করার জন্য ডিম ও সবজি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। কিছুদিন পর থেকে তিনি জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে রেশন পৌঁছানোর কাজ শুরু করেন।

সেই সময় তার সাথে আলাপ হয় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উদয় কুমার-এর। মনোজ জানান উদয় তাকে পড়াশোনা শেষ করার পরামর্শ দেন। এর পর তিনি একটি ইভিনিং কলেজে ভর্তি হন। দিনে সবজি বিক্রি করতেন এবং সন্ধ্যেবেলায় কলেজে ক্লাস করতেন। এইভাবে 2000 সালে তিনি বিএ পাস করেন। এরপর উদয় তাকে ইউপিএসসি দেওয়ার কথা বলেন। মনোজ কুমার প্রথমে বুঝতে পারেন না যে তিনি ইউপিএসসি দিতে চান, নাকি সারাজীবন সবজি বিক্রি করতে চান।

2001 সাল থেকে ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে লেগে পড়েন মনোজ। পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপক এতে তাকে সাহায্য করেন। এরপর 2003 সালে প্রথমবার ইউ পি এস সি পরীক্ষায় বসেন মনোজ। তিনি স্কুলের ছাত্রদেরও পড়াতেন যাতে তার হাত খরচ চলতে পারে। যদিও প্রথমবারে তিনি সফলতা অর্জন করতে পারেননি। পরপর চারবার তিনি ইউ পি এস সি পরীক্ষায় অসফল হন।

পঞ্চম বারে তিনি নিজের পড়ার ধরন বদলান এবং প্রিলিম্সের প্রস্তুতির বদলে মেন্স এর জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন। তিনি জানান এতে তার 80% সিলেবাস কভার হয়ে যায়। এমনকি তিনি ক্লাস সিক্স থেকে টুয়েলভের এনসিআরটির পাঠ্যপুস্তক পড়তেন। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এর জন্য তিনি সিভিল সার্ভিসের মাসিক পত্রিকা পড়েন। এছাড়াও তিনি নিবন্ধ লেখা শুরু করেন। তার এই সমস্ত প্রয়াস তাকে পঞ্চম বারের পরীক্ষায় ভীষণ ভাবে সাহায্য করে এবং তিনি 2010 সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button