এক শরীরে দুইজন মানুষ, একজন গণিতের শিক্ষিকা অন্য জন ইংরেজির

দুইটি শরীর একটি প্রাণ এর কথা আমরা অনেক সময় শুনে এসেছি, কিন্তু এক শরীরে দুটি প্রাণ। এমন কথা সেই ভাবে শুনতে পাওয়া যায় না। একজন ইংরেজি শিক্ষিকা অপরজন গণিতের। এমনই একটি গল্প ব্রিটেনের দুই মেয়ের। জন্ম থেকেই তাদের একটি মাত্রই শরীর। তাদের পৃথক করা গেলেও একজনের প্রাণ সংশয় রয়েছে। তাই কখনো তাদের পৃথক করা যায়নি।

১৮৯০ সালের ৭ ই মার্চ জার্মানির মিনেসোটায় জন্ম হয় এই দুই মেয়ের। পেটি হেনসেল অন্য সমস্ত সন্তানের মতোই সন্তানদের দশ মাস গর্ভে ধারণ করেছিলেন। কিন্তু যখন জন্ম দিলেন তখন দেখতে পেলেন একটি শরীরে দুটি প্রাণ। একজনকে বাঁচাতে গেলে অন্য জন মারা যাবে, যেটি কখনোই একজন মা করতে পারে না। অতঃপর মা হিসেবে জীবনযুদ্ধ চলতে থাকে পেটির। দুই সন্তানকে একইসঙ্গে বড় করে তোলেন তিনি।

মনের মতো করে মানুষ করতে পেরেছিলেন তিনি তার দুই সন্তানকে তাই আজ দু’জনেই প্রতিষ্ঠিত শিক্ষিক। একজন গণিতের অন্যজন ইংরেজির। বাইক চালাতে পারেন তারা দুজনেই। একইসঙ্গে যাবতীয় সব কাজ করেন তারা। তবে তাদের দুইটি মাথা এবং ঘাড় আলাদা। দুটি পায়ে ভর দিয়ে চলে এই দুই বোন। ৩৩ বছর বয়সী এই বোনেরা এরইমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে ফেলেছেন। অসম্ভবকে জয় করতে পেরেছেন তারা।

একে অপরের সহমর্মী হয়ে দাঁড়িয়েছেন তারা। ৫০ হাজারের মধ্যে মাত্র একজন এমনভাবে জন্মাতে পারে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ মারা যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে পেরেছে। তাদের মাথা ঘাড় এবং হৃদপিণ্ড এমনকি পাকস্থলী পিত্তথলি সবকিছুই আলাদা। অন্যদিকে তাদের তিনটি ফুসফুস রয়েছে। সেইসঙ্গে দুটি কিডনি এবং একটি করে লিভার। জন্মের সময় তারা মোট তিনটি হাত নিয়ে জন্মেছিলেন, যার মধ্যে একটি ছিল সম্পূর্ণ অকেজো। তাই আপাতত দুটি হাত নিয়ে তারা সব কিছুই করতে পারেন। লিখতে, পোশাক পরতে, এমনকি পিয়ানো বাজাতে তারা সক্ষম।

তবে ঘুমানোর সময় অন্যদের মতো স্বাভাবিক ভাবে সঠিকভাবে ঘুমোতে পারে না তারা। তবে একই সঙ্গে তাদের শরীরে জ্বর হয় না। একজন সুস্থ থাকলে অন্যজনও অসুস্থ হয়ে যায়। একজন একপাটি হিল জুতা পরলে অন্যজনকেও হিল জুতো পরতে হয়। তাই পছন্দ তাদের আলাদা আলাদা হলেও একে অপরের পছন্দসই তাদের চলতে হয় এভাবে পড়াশোনা করে আজ তারা শিক্ষক হয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছেন।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button