ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াকে যেভাবে ব্যবহার করে ঋণ পরিশোধ করলো এই ভাই-বোন

মানুষের যখন লক্ষ্য স্থির থাকে তখন সে যে কোনো পর্যায়ে তার গন্তব্য অর্জন করার চেষ্টা করে। আজ এমনই একজন ব্যক্তির কথা আপনাদের বলব। ধানবাদের বালিয়াপুরের একটি ছোট গ্রামের বাসিন্দা নিপানিয়ার সনাতন, মাত্র 26 বছর বয়সে তাঁর দক্ষতার জোরে তার লক্ষ্যে পৌঁছন এবং অনেক যুবকের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।
স্নাতকোত্তর শেষ করার পরেও তিনি চাকরি পাচ্ছিলেন না, তাই পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য তিনি ইন্টারনেট মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টিকটকে নিজের এবং তার বোন সাবিত্রীর সাথে নাচ এবং গানের ভিডিও আপলোড করতে শুরু করেন। যখন তার এই দক্ষতা আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে, তখন সবাই বেশ অবাক হয়ে যায়।
করোনার কারণে সারাদেশ প্রায় তোলপাড় ছিলো, আর গোটা দেশে লকডাউন ছিলো। তাই দুজনেই তাদের কঠিন সময় থেকে মুক্তি পেতে ইউটিউব চ্যানেল, ইনস্টাগ্রামে একাউন্ট তৈরি করে ভিডিও পোস্ট করার শুরু করেন, কারণ ভারতে টিকটক ব্যান করে দেওয়া হয়।
লোকেরা সনাতন এবং সাবিত্রীর ভিডিওগুলো এতো পছন্দ করছে যে, তাদের ভিউজ দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। এক বছরের মধ্যে সনাতনের ইউটিউব চ্যানেল ‘ডান্সার সনাতন’ এর 1 মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার হয় এবং করোনার সময়েও এই ভাই-বোন জুটি ভিডিও আপলোড করে প্রায় 9 লাখ টাকা আয় করেছেন। এই টাকা খরচ করে সে প্রথমে নিজেদের জন্য দুটি কামরার একটি বাড়ি তৈরি করেছেন এবং তারপরে নিজের ভিডিও শুট করার জন্য দুটি ভালো মানের ক্যামেরা এবং একটি ল্যাপটপ কিনেছেন। যেখানে সনাতনের সাইকেল পর্যন্ত ছিল না আজ তার একটি বাইক আছে এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঋণগ্রস্ত সনাতন 50,000 টাকা ঋণ পরিশোধ করেছেন।
সনাতন তার ইউটিউব চ্যানেলে মাত্র 245 টি ভিডিও আপলোড করেছেন এবং প্রতিটি ভিডিওই প্রায় 1 থেকে 7 মিলিয়ন মানুষ দেখেছে যার মধ্যে ’52 গজ কা দামান’ সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও হয়ে উঠেছিল এবং 7.2 মিলিয়ন মানুষ তা দেখেছে এবং পছন্দ করেছেন।
সনাতনের বোন সাবিত্রীও ‘সাবিত্রী কুমারী অফিশিয়াল’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন, যার সাবস্ক্রাইবার রয়েছে 50,000 এবং শুধু তাই নয় ইউটিউব এর পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামেও সেন্সেশন হয়ে উঠেছেন সনাতন।
কৃষক পরিবারের সদস্য সনাতন কুমার মাহাতো এবং তার বোন সাবিত্রী কুমারী গ্রামে থেকেও উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন এবং সনাতন পড়ালেখা শেষ করে চাকরি না পেয়ে অন্যের ক্ষেতে কাজ করা শুরু করেছিল। তার বোন সাবিত্রী একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন কিন্তু লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায় তাদের।