অপমানের জবাব ফোর্ড কম্পানিকে কি বলেছিলেন টাটা?

টাটা মোটর্সের প্যাসেঞ্জার কার বিভাগ বিক্রি করতে গিয়ে ১৯৯৯ সালে ফোর্ডের কাছে কী অপমানই না সইতে হয়েছিল টাটা গোষ্ঠীর তত্কালীন চেয়ারম্যান রতন টাটা ও তাঁর সঙ্গীদের৷ কিন্তু ন’বছর পরে, ২০০৮ সালে ফোর্ডের দুর্দিনে জাগুয়ার-ল্যান্ড রোভার কিনে নিয়ে উল্টে ওই সংস্থাকে সাহায্যই করেছিলেন রতন টাটা৷
তিনি চেয়ারম্যান থাকাকীলন টাটা মোটর্সের মধ্যে জেএলআরের গাড়ি বিক্রিবাবাদ আয়ও ভালো জায়গা করে নিয়েছিল৷ বর্তমানে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এমেরিটাস রতন টাটার হয়ে একটি পুরস্কার গ্রহণ করতে গিয়ে এ কথা জানিয়েছেন তাঁর তত্কালীন সহকর্মী ও বর্তমানে টাটা ক্যাপিটালের প্রধান প্রবীণ কান্ডলি৷
টাটা মোটর্সের সঙ্গে ফোর্ডের বৈঠক প্রসঙ্গে কাণ্ডলি বলেন, ‘ওঁরা আমাদের বলেছিলেন, আপনারা কিছুই জানেন না, কেন যে আপনারা প্যাসেঞ্জার কার বিভাগটি শুরু করলেন! ওঁরা বললেন, আমাদের কার বিভাগটি কিনে নিয়ে ওঁরা আমাদের উপকার করবেন৷’ ১৯৯৯ সালে ডেট্রয়েটে ফোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে সেই বৈঠক যোগ দিয়েছিলেন টাটা গোষ্ঠীর তত্কালীন চেয়ারম্যান রতন টাটা ও শীর্ষকর্তারা৷
স্মৃতি রোমন্থন করে কান্ডলি বলেন, সে দিন সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্ক ফেরার সম ৯০ মিনিটের বিমানযাত্রায় একটা কথাও বলেননি রতন টাটা৷ কাণ্ডলি বলেন, ‘সেটা ১৯৯৯ সাল, আর তার পরে ২০০৮ সালে সেই ফোর্ডের কাছ থেকেই আমরা জেএলআর কিনে নিলাম৷ টাটাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফোর্ডের চেয়ারম্যান বিল ফোর্ড বলেন, জেএলআর কিনে আপনি আমাদের ভীষণ উপকার করলেন৷’
১৯৯৮ সালে হ্যাচব্যাক শ্রেণির ইন্ডিকা গাড়ি বাজারে আনার পরে পরেই তার বিক্রি তেমন না হওয়ার জন্যই ফোর্ড মোটরকে গাড়ির ব্যবসা বিক্রি করে দিতে গিয়েছিল টাটা মোটর্স৷ কান্ডলি বলেন, ‘গাড়ি চালু করার পরে বিক্রি তেমন না হওয়ায় অনেকেই চেয়ারম্যান টাটাকে প্যাসেঞ্জার কার ব্যবসা বিক্রি করে দেওয়ার পরামর্শ দেন৷ তখন ফোর্ডের আধিকারিকরা আমাদের প্রধান কার্যালয় বম্বে হাউসে আসেন ও আমাদের গাড়ি ব্যবসা কেনার ব্যাপারে নিয়ে আগ্রহ দেখান৷
আলোচনার জন্য আমাদের ডেট্রয়েটে ডাকা হয়, আমি চেয়ারম্যানের সঙ্গেই ছিলাম৷ প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বিক্রি নিয়ে আমরা ফোর্ডের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলি এবং তাঁরা আমাদের সঙ্গে অপমানসূচক আচরণ করেন৷’ টাটার গাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপারে অবদান রয়েছে কাণ্ডলিরও৷ টাটা মোটরসের সিনিয়র লিডারশিপ টিমে ছিলেন তিনি৷ এই টিমই দক্ষিণ কোরিয়ার দেয়ু, যুক্তরাজ্যের ইনক্যাট টেকনোলজিস ও শেষ পর্যন্ত জেএলআর কিনতে সক্ষম হয়েছিল ৷