“অনুগ্রহ করে শুনুন” ট্রেনের এই রেকডিং অ্যানাউন্স যার গলায় হয় তাকে চেনেন কি ?দেখেনিন সে কে

ট্রেনে যাতায়াত আমাদের নিত্য। অফিস হোক কিংবা স্কুল -কলেজ যাতায়াতের জন্য ট্রেনই যাদের একমাত্র মাধ্যম তারা কখনও খেয়াল করে দেখেছেন ট্রেন ঘোষণার সময় সেই মেয়েলি কন্ঠটা? প্রায় প্রতিটা স্টেশনেই যে একই কন্ঠকে ট্রেন ঘোষণা বা অ্যানাউন্স করতে শুনি। অনেকেই হয়তো মনে করেন কোনো কম্পিউটারইজড কন্ঠ সেটা কোনো ব্যক্তির নয়। অনেকে আবার মনে করেন যে না কোনো ব্যক্তিই এটি করে থাকেন। তবে প্রতিটা স্টেশনে গিয়ে গিয়ে এই ঘোষণা কি করে সম্ভব? তবে আসুন জেনে নিন এর পিছনের অজানা কাহিনী।
এই মহলা কন্ঠটি যার তার নাম সারলা চৌধুরী। প্রায় প্রতিটা স্টেশনেই তার কন্ঠেই ট্রেনের ঘোষণা শুনে আমরা বুজতে পারি কখন কোন প্লাটফর্মে কোন ট্রেন আসছে। আর এটা আজকে থেকে নয় হয়ে আসছে প্রায় বিগত ২০ বছর ধরে, শুনে আসছি আমরা একই কন্ঠ। ১৯৮২ সাল নাগাদ রেলের পরীক্ষার এক ইন্টারভিউতে পাস করার পরই এই কাজ পেয়েছিলেন সারলা চৌধুরী। তবে তখন ব্যবস্থা এতটা আধুনিক ছিলনা, কম্পিউটারও তখনও আসেনি তাই অনেক স্টেশনেই গিয়ে গিয়ে ট্রেনের সময় এবং স্থান ঘোষণা করতো হত তাকে।
এক ইন্টারভিউতেই তিনি বলেছিলেন যে,” তখন কষ্ট হত ঠিকই কিন্তু তখন সেই কাজটা করেছিলেন বলেই আজ সব স্টেশনেই তার গলা শুনতে পাওয়া যায়।” সত্যিই’তো এমনটাই হয়েছে তিনি এই কাজ ছেড়ে দিয়েছেন প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর হলো। তবু তার কন্ঠ প্রায় অমরত্ব পেয়ে গেছে বলা চলে। আসলে কম্পিউটার আসার পরই এটা সম্ভব হয়েছে।
কম্পিউটার আসার পরই তার গলা কম্পিউটারইজড করা হয়। যার ফলে তার গলায় সব স্টেশনেই ট্রেন ঘোষণা করা শুরু হয় এবং সবরকমভাবে এটা করা সম্ভব হয়, অর্থাৎ সব ট্রেনের ক্ষেত্রেই যেহেতু কম্পিউটারইজড। তারপর কার্যত তাকে আর এই কাজে প্রয়োজন হয়নি। রেল তাকে অন্য পদে পাঠিয়ে দিলে সেখানে কিছু বছর চাকরি করার পর এখন অবসর জীবনযাপন করছেন সারলা দেবী। অন্যদিকে তার কন্ঠ বেজে চলছে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব স্টেশনে।
এই ঘটনা অনেকেরই হয়তো অজানা ছিলো, অনেকেই ভাবতেন হয়তো ব্যপারটা নিতান্তই কম্পিউটারের কোনো আধুনিক প্রয়োগ। তবে এর পিছনে যে সারলা দেবীর কতটা পরিশ্রম এবং দক্ষতা লুকিয়ে আছে তা সেই সময়ের মানুষরাই বুঝবেন যারা কম্পিউটার আসার আগের পৃথিবীকেও দেখেছেন।