সাবেক ভূমিমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে কোটি টাকা আত্মসাৎ
চট্টগ্রাম: ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল) থেকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় আরামিটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অনুপস্থিতি ও অনুমতি ছাড়াই ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরের চান্দগাঁও থানাধীন কালুরঘাট ভারী শিল্প এলাকায় আরামিট গ্রুপের অফিস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট মোকাররম হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, ইউসিবিএল ব্যাংকের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলার আসামি আরামিটের এজিএম জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরামিট পিএলসির ১১টি চেকে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা মালিকের অনুপস্থিতিতে অনুমতি ছাড়া উত্তোলন করা হয়েছিল। চেকের মুড়ি ও প্রমাণপত্রসহ আরামিট অফিস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত ২৪ জুলাই দুদকের উপপরিচালক মশিউর রহমান বাদী হয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, তার স্ত্রী, ভাইবোনসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাবেক মন্ত্রী জাবেদের মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে পাঁচটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান ভিশন ট্রেডিং, আলফা ট্রেডার্স, ক্ল্যাসিক ট্রেডিং, মডেল ট্রেডিং ও ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং খোলা হয়।
এসব প্রতিষ্ঠানের নামে ইউসিবিএল ব্যাংকের চট্টগ্রাম বন্দর শাখায় হিসাব খুলে গম, ছোলা, হলুদ ও মটর আমদানির নামে ২৫ কোটি টাকার টাইমলোন অনুমোদন করানো হয়।
ব্যাংকের নিজস্ব ক্রেডিট কমিটির ১৭টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ উপেক্ষা করে ২০২০ সালের ৮ মার্চ পরিচালনা পর্ষদ ওই ঋণ অনুমোদন দেয়। এরপর সেই টাকা ভাগ করে একই ব্যাংকের চারটি হিসাব নম্বরে স্থানান্তর ও পরে নগদে উত্তোলন করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, টাকা স্থানান্তর করা এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা আরামিট গ্রুপের কর্মচারি। নগদ উত্তোলনের পর আরামিট গ্রুপের হিসাবগুলোতে পে-অর্ডার ও ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ ফেরত দেওয়া হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪২০, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ চট্টগ্রাম-১৩ আসনের সাবেক এমপি। তিনি ২০১৪-২০১৮ পর্যন্ত ভূমি প্রতিমন্ত্রী ও ২০১৯-২০২৩ পর্যন্ত পূর্ণমন্ত্রী ছিলেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর তার স্বস্ত্রীক দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। তার বিরুদ্ধে দেশ থেকে অর্থপাচার করে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল সম্পদ কেনার অভিযোগ রয়েছে।