1. ekhonbartabd@gmail.com : দৈনিক এখন বার্তা : দৈনিক এখন বার্তা
  2. info@www.ekhonbarta.com : দৈনিক এখন বার্তা :
শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৪ অপরাহ্ন

জুলাই সনদ সইয়ের মাধ্যমে হলো নতুন বাংলাদেশের সূচনা: প্রধান উপদেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

জুলাই সনদ সইয়ের মাধ্যমে হলো নতুন বাংলাদেশের সূচনা: প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সারা বিশ্বের জন্য এক বিরল ও ঐতিহাসিক উদাহরণ হয়ে থাকবে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই যে মহান একটি দিবস এবং বিশেষ একটি ক্ষণ আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন।

সমগ্র জাতি একসঙ্গে হয়ে, সমস্ত রাজনৈতিক নেতা একত্র হয়ে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছেন; এমন ঘটনা ঘটবে, তা আমরা কেউ কল্পনাও করতে পারিনি। যখন ঐকমত্য কমিশন গঠন করলাম, তখন মনে মনে আশা ছিল হয়তো দুয়েকটি বিষয়ে তাদের একমত করতে পারব।
রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শুনলে মনে হতো, কেউ কারও কথা শুনবে না। কাজেই ভয়ে ভয়ে আমরা এটি শুরু করেছিলাম।
তিনি বলেন, কিন্তু অবাক কান্ড! সারা দেশ দেখল সমস্ত রাজনৈতিক দল শুধু বসলো না, বরং চমৎকারভাবে আলাপ-আলোচনা করল। এত গভীর ও জ্ঞানসমৃদ্ধ আলোচনা হবে, এত সৌহার্দ্যের সঙ্গে আলোচনা হবে; না দেখলে বিশ্বাস করা যেত না। আপনারা প্রত্যেকে দেখেছেন, কীভাবে তারা তাদের নীতি ও বক্তব্য তুলে ধরেছেন, যা পুরো জাতি প্রত্যক্ষ করেছে।

মানুষ শুধু শুনেনি, তারা মনে মনে অংশগ্রহণ করেছে, ঘরে ঘরে তর্ক-বিতর্ক করেছে। কার কথা ঠিক, কার বক্তব্য যুক্তিযুক্ত, কোনটি গ্রহণযোগ্য হবে; তা নিয়ে আলোচনা করেছে। আপনারা শুধু সীমাবদ্ধ কক্ষে বসে আলোচনা করেননি, বরং সমগ্র জাতিকে সেই আলোচনায় শরিক করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সবাই অংশগ্রহণ করেছে, কেউ তাৎক্ষণিকভাবে রাজি হয়ে যায়নি। প্রথমে মনে হচ্ছিল, আলোচনা হয়তো খুব দূর এগোবে না; কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়ে সমাপ্ত হবে। কিন্তু ক্রমে ক্রমে যত জটিল বিষয়ই আসুক না কেন, সবাই ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। আজ আমরা একটি দীর্ঘ তালিকা নিয়ে এই সনদ প্রণয়ন করতে পারছি। রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন; তাদের নাম চিরকাল অক্ষয় থাকবে। ভবিষ্যতে মানুষ ভাববে তারা কীভাবে এটি সম্ভব করেছিলেন! আজকের এই দিনটি আমরা পেয়েছি; এটি সত্যিই এক মহান দিন। এই দিনটির কথা চিন্তা করলে গা শিউরে ওঠে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এমন একটি দিন শুধু জাতির জন্য নয়, সমগ্র পৃথিবীর জন্যও একটি বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে। বহু দেশে এটি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হবে, শ্রেণিকক্ষে আলোচনা হবে, রাজনীতিবিদদের মধ্যে এ নিয়ে বিতর্ক হবে ‘কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক’, ‘তারা কী বলল, আমরা কী চাই’। অন্য দেশগুলোও চেষ্টা করবে, তাদের দেশেও এমন ঐকমত্য সম্ভব কিনা। আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন, তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সারা পৃথিবীর জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। আমি তাদের অভিনন্দন জানাই দেশকে উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য, দেশকে নতুন পথে পরিচালিত করার জন্য। ”

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এই যে আমরা এটা পারলাম, একটি কমিশন বসিয়ে সবাইকে ঐকমত্যে আনার চেষ্টা করলাম; তাদের কথা স্মরণ করি, গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের কথা স্মরণ করি, যাদের কারণে আজ আমরা এখানে এসেছি। যারা এই অভ্যুত্থানের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন তাদের কথা স্মরণ করি; যারা আহত হয়েছেন, বীর যোদ্ধা যারা আজও কষ্টে আছেন তাদের কথা স্মরণ করি। তাদের কাছে আমরা শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তাদের জন্যই আজকের এই দিনটি সম্ভব হয়েছে। সারা জাতি তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবে।

আজ আমরা সবাই মিলে যে স্বাক্ষর করলাম; এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিবর্তিত হবে। এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে গণঅভ্যুত্থানের কারণে; ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের কারণে। সেটিই ছিল প্রথম ধাপ, আর আজকের জুলাই সনদ সেই ধারাবাহিকতার দ্বিতীয় অংশ। আমরা পুরনো কথাবার্তা ফেলে নতুন ভাবনা নিয়ে এসেছি; জাতীয় জীবনে, সংবিধানের কাঠামোয়, এবং সরকার পরিচালনার নীতিতে এসেছে বড় পরিবর্তন। এই পরিবর্তন আমাদের সামনে এগিয়ে নেবে।

তিনি আরও বলেন, আজ আমাদের নবজন্ম হলো; এই স্বাক্ষরের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের সূচনা করলাম আমরা। যে তরুণরা এই দিনটিকে সম্ভব করেছে, যারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে পরিবর্তনের জন্য জীবন দিয়েছে; তারাই এই নতুন বাংলাদেশকে গড়ে তুলবে, এই আলো ও চিন্তার ধারায় তারা নেতৃত্ব দেবে। বাংলাদেশ তরুণদের দেশ। এই দেশ গঠনের দায়িত্ব আগামী সরকারগুলোর হাতে থাকবে। সেই প্রস্তুতিরই অংশ এই জুলাই সনদ। এর মাধ্যমে আমরা এক বিশাল কাজ সম্পন্ন করেছি; আমরা বর্বরতা থেকে সভ্যতায় এসেছি। আমরা ছিলাম এমন এক জগতে, যেখানে আইন-কানুন ছিল না, যা ইচ্ছা তাই করা যেত। এখন আমরা সভ্যতায় এসেছি এমন এক সভ্যতা গড়ে তুলবো, যেখানে মানুষ আমাদেরকে ঈশ্বরের চোখে দেখবে।

আমাদের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল যদি আমরা সমাজটাকে সঠিকভাবে গঠন করতে পারি। আজ যে সনদে স্বাক্ষর করা হলো, তা থেকে বহু দেশ শিক্ষা নিতে আসবে; এটা আমি আপনাদের গ্যারান্টি দিয়ে বলছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট