৫১ জেলে আরাকান আর্মির কাছে জিম্মি রয়েছে: বিজিবির সেক্টর কমান্ডার…
আরাকান আর্মির কাছে এখন পর্যন্ত ৫১ জন বাংলাদেশি জেলে জিম্মি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ।
এ ব্যাপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে ‘আনঅফিসিয়ালি’ যোগাযোগ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের (আরাকান আর্মি) ওপর চাপ প্রয়োগ করছি, যেন আর কোনো জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া না হয়।’
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে বিজিবির রামু সেক্টর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সেক্টর কমান্ডার দাবি করেন, অপহরণ নয়, শূণ্যরেখা অতিক্রম করে মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে পড়ায় আরাকান আর্মি জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে থাকা পুরো সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ এখন মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে। দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ ও সংঘাতময় পরিস্থিতির মধ্যে রোহিঙ্গাদের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ কারণে সীমান্তে আরাকান আর্মির তৎপরতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নাফ নদী ও সাগর মোহনায় জলসীমার শূণ্যরেখা অতিক্রম করা জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।’
কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নাফ নদীর মোহনাসংলগ্ন কয়েকটি এলাকায় ডুবোচরের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে কোনো কোনো সময় জলসীমার মিয়ানমার অভ্যন্তর দিয়ে চলাচল করতে হয়। এছাড়া জেলেরা অনেক সময় ভুলবশত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। এতে আরাকান আর্মির হাতে বাংলাদেশি জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।’
এখন পর্যন্ত ৫১ জন বাংলাদেশি জেলে আরাকান আর্মির কাছে জিম্মি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সীমান্ত নন-ফ্যাক্টর গোষ্ঠী হলেও তাদের সঙ্গে বিজিবির আনঅফিসিয়াল যোগাযোগ রয়েছে। জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আলাপ হচ্ছে। আমরা তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছি, যেন আর কোনো জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া না হয়।’
সেক্টর কমান্ডার আরও বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরতে গেলে অবশ্যই আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত সীমানা মেনে চলতে হবে, এ ব্যাপারে জেলেদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে।’
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে সীমান্তে আসা কিছু রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আহত ও অসহায় কিছু রোহিঙ্গার অবস্থা দেখে মানবিকতার খাতিরে তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।’
‘তবে সীমান্ত সুরক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করছি। মাদক ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর নজরদারি চলছে,’ যোগ করেন মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরও বলেন, ‘সীমান্ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সরকার বিজিবিতে জনবল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সীমান্তে উদ্ভুদ যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি প্রস্তুত রয়েছে।’