রাজীব দাশ
প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল, ২১ ভরি অলংকারসহ গ্রেফতার প্রেমিক
হোয়াটসঅ্যাপে পরিচয়। ধীরে ধীরে কথা, তারপর ঘনিষ্ঠতা। একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন বছর উনিশের শাফায়েত উল্লাহ আকাশ নামের এক তরুণ। সম্পর্কের আড়ালে চলছিল ফাঁদ পেতে ব্ল্যাকমেইল। সেই ফাঁদেই আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় কিশোরী। একসময় ঘরের সোনার গয়না, আবার কখনও নগদ টাকা—সবই তুলে দেয় ‘প্রেমিকের’ হাতে।
ঘটনাটি চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার। পুলিশ জানায়, কলেজছাত্রী নাফিসা বিনতে আলমের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে পরিচয় হয় শাফায়েতের। ধীরে ধীরে তারা পরস্পরের ব্যক্তিগত ছবি আদানপ্রদান করে। কিন্তু কিছুদিন পরই শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল। ছবি এডিট করে অশ্লীল করে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করে শাফায়েত। প্রথমে দাবি করে দুই লক্ষ টাকা। মেয়ে জানায়, সেই টাকা দিতে পারবে না। তখন শুরু হয় আরও ভয়াবহ শর্ত বাসা থেকে মায়ের সোনার গয়না এনে দাও।
ভয়ে-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে নাফিসা। পরিবারের মানসম্মানের কথা ভেবে আত্মসমর্পণ করে সে। ৫ মার্চ দুপুরে সাবেরিয়া দিদার মার্কেটের কাছে সাফা আর্কেট কমিউনিটি সেন্টারের সামনে শাফায়েতকে মায়ের একটি জোড়া স্বর্ণের চুড়ি (ওজন ২ ভরি) দেয়। এরপর শুরু হয় ধাপে ধাপে আরও সোনা তুলে দেওয়া। চুড়ি, চেইন, আংটি, নেকলেস ও দুল মিলিয়ে মোট ২১ ভরি সোনা তুলে দেওয়া হয় ‘প্রেমিকের’ হাতে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৩১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, ১৫ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন সময়ে তুলে দেওয়া হয় আরও ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।
অবশেষে ভেঙে পড়ে নাফিসা। পুলিশকে জানায় সমস্ত ঘটনা। তদন্তে নামে কোতোয়ালী থানা। অভিযান চালিয়ে ১৬ ভরি সোনা ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয় অভিযুক্ত শাফায়েতের কাছ থেকে। গ্রেফতার করা হয় তাকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইন মাধ্যমে মেয়েদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা ও মূল্যবান জিনিস হাতিয়ে নিচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, ভয়ভীতি ও চাঁদাবাজির একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।