আবদুল হামিদ চকরিয়া প্রতিনিধি
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ‘খুটাখালী পাওয়ার হাউজ’ থেকে ডাকাতি হওয়া ৮ লাখ টাকা মুল্যের ৫২টি ইজিবাইক ব্যাটারি বিএমচর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মানিকের ছোট ভাইয়ের গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ ও হেলপারকে আটক করা হয়।
এঘটনায় মানিকের ছোট ভাই মাস্টার শওকত ওসমান ও বোনের জামাই ইসমাইল রাজুসহ ৮ জনের নামে চকরিয়া থানায় ডাকাতি মামলা রেকর্ড হয়। কিন্তু মামলা হলেও কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার বাদী খুটাখালী পাওয়ার হাউজ এর মালিক আরিফুল ইসলাম লিটন জানান- ২৮ নভেম্বর গভীর রাতে তার গ্যারেজ থেকে ৫৩টি ইজিবাইক ব্যাটারি ডাকাতি করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ ডাকাত দল। ৩০ নভেম্বর উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও প্যানল চেয়ারম্যান ইসমাইল মানিকের ছোট ভাই মাস্টার শওকত ওসমানের টমটম গ্যারেজে তার ভগ্নিপতি রাজু’র বাড়ি থেকে মজুদ অবস্থায় এসব ব্যাটারি উদ্ধার করে চকরিয়া থানা পুলিশ।
পুলিশের নকল পোশাক গায়ে প্রায় ৮ লাখ টাকা মূল্যের ৫৩টি ব্যাটারি ডাকাতির ঘটনায় গত ১ ডিসেম্বর চকরিয়া থানায় ডাকাতি মামলা রুজু হলেও কোন এক অদৃশ্য কারনে এজাহার নামীয় আসামি গ্রেফতার করছেনা পুলিশ।
বিএমচরের উত্তর বহদ্দারকাটা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ইসমাইল মানিকের আস্কারায় তার ভাই শওকত, ঈসকান্দর, সোহাগ ও ভগ্নিপতি ইসমাইল রাজু এলাকায় বেপরোয়া জীবন যাপন করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে চোরাই টমটমের ব্যবসা, পল্লী বিদ্যিুতের মিটার বানিজ্য, নিরীহ গ্রাহকদের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শককত ওসমানের রয়েছে পুরাতন টমটমগাড়ি মেরামতের কারখানা। এই কারখানায় চোরাইকৃত টমটম গাড়ি সংগ্রহ করে সেগুলো কেটে টুকরো টুকরো করে পার্টস গুলো আলাদা করে ফেলে। পরবর্তীতে ভিন্ন ভিন্ন টমটমের পার্টস জোড়া লাগিয়ে নতুন টমটমের মতো রং করে বেশি দামে বিক্রি করে।
বিএমচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খুটাখালী থেকে ডাকাতি হওয়া ৮ লাখ টাকা মুল্যের ব্যাটারী গুলো যাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে একাধিকবার চোরাই টমটমের ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। সঠিক তথ্য প্রমানের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন যেহেতু হাতেনাতে ডাকাতিকৃত মালামাল পাওয়া গেছে, তাই অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে তিনি চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাহেবকে অনুরোধ জানান।
ডাকাতি মামলার চিহ্নিত আসামিরা প্যানেল চেয়ারম্যান ইসমাইল মানিকের ছত্রছায়ায় বহাল তবিয়তে এলাকায় ঘুরাফেরা করলেও থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
ডাকাতি মামলার আসামি গ্রেফতার না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুরুল কাদের ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে, পাশাপাশি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযানও চলছে। আসামীদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে অভিযোগ জোরদার করা হবে।