লক্ষ্মীপুরে সেই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে হত্যার নেপথ্যে ছিনতাই
মোশাররফ হোসেন লক্ষীপুর
স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে লক্ষ্মীপুরে স্বর্ণ ব্যবসায়ী হিরা লাল দেবনাথকে (৫৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিয়াউর রহমান তুষার, সজিব হোসেন বাহার ও মোবারক হোসেন নামে তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আকতার হোসেন বলেন, হত্যার ঘটনার পর পরই রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে কাজ শুরু করে পুলিশ। কিন্তু অপরাধীরা তাদের সব মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। তারা নতুন ফোন ব্যবহার ও তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে। পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমেই তুষারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার প্রত্যন্ত হাওড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার তথ্যমতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে বাহারকে ও পরে রায়পুর থেকে মোবারককে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসপি আরও বলেন, ডাকাতিসহ বিভিন্ন ঘটনায় মোবারকের বিরুদ্ধে ২০টি ও বাহারের বিরুদ্ধে ৮টি মামলা রয়েছে। তবে তুষারের বিরুদ্ধে আগে কোনো মামলা নেই। এ চক্রে সে নতুন। ঘটনার সময় তুষার মোটরসাইকেল চালিয়েছে। মোবারক ও বাহার মোটরসাইকেলে বসা ছিল।
এসপি বলেন, প্রতিদিনই দোকান বন্ধ করে হিরা লাল টাকা ও স্বর্ণালংকার সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে যেতেন। পরিকল্পিতভাবে তার কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনতাইয়ের ছক সাজান অপরাধীরা। মোবারক কাজির দিঘীর পাড় বাজার থেকে মোবাইলফোনে হিরা লালের অবস্থান জানান। পরে হিরালাল দোকান বন্ধ করে বের হলে মোবারক, বাহার ও তুষার মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে গিয়ে দাঁড়ায়। বাহার স্বর্ণালংকারসহ টাকা ছিনতাইয়ের জন্য হিরালালের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে। একপর্যায়ে হিরা লালের চিৎকারে লোকজন আসতে শুরু করলে বাহার ছুরি দিয়ে তাকে আঘাত করে। পরে তারা মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। হিরা লালের চিৎকারের কারণে তারা স্বর্ণালংকার ছিনতাই করতে পারেনি।
গ্রেপ্তার তুষার রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের লুধুয়া গ্রামের বাসিন্দা, বাহার বামনী গ্রামের ও মোবারক দলাল বাজার এলাকার বাসিন্দা।
গত ৮ নভেম্বর রাতে সদর উপজেলার কাজিরদিঘীরপাড় বাজারের মাতৃশিল্পালয়ের স্বত্ত্বাধিকারী হিরালালকে উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামের তেতুল তলা এলাকায় ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরদিন নিহতের ছেলে প্রীতম দেবনাথ অজ্ঞাতদের আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।