এম কে আলম চৌধুরী
বিজিবি সীমান্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করছে : কক্সবাজার রিজিয়নের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মেজর জেনারেল আসাদুল্লাহ
রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি, এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ মিনহাজুল আলম বলেছেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ প্রায় ২২৯ বছরের পুরনো একটি ঐতিহ্যবাহী বাহিনী। কালের পরিক্রমায় রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন হতে আজকের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ নামে এই বাহিনী সীমান্ত রক্ষী হিসেবে সকল অভিযানিক কার্যক্রম অত্যন্ত সফলতার সাথে পরিচালনা করে আসছে। দীর্ঘ যাত্রায় সকল সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা অতিক্রমের মাধ্যমে আজকের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ একটি দক্ষ, শক্তিশালী, আধুনিক ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কক্সবাজার রিজিয়ন এর ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
তিনি বলেন, একটি বাহিনীর পুনর্গঠনের ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকাস্থ বিজিবির সদর দপ্তর পিলখানায় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে কক্সবাজার রিজিয়ন হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বর্তমানে এ রিজিয়নের আওতায় আরআইবিসহ দুইটি সেক্টর ( রামু ও বান্দরবান) ও সাতটি ব্যাটালিয়ন হয়েছে।
মেজর জেনারেল আসাদুল্লাহ বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে কক্সবাজার রিজিয়নের আওতাধীনঅধিকাংশ এলাকায় বিভিন্ন অবৈধ মালামাল ও মাদক চোরাচালান প্রবণ এলাকা।
ফলে সীমান্তবর্তী এই সমতল ও দূর্গম এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অপতৎপরতা রয়েছে। চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে এই রিজিয়নের প্রতিটি সদস্যই সার্বক্ষণিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমারের অভ্যন্তরে বিবদমান অস্থিতিশীল পরিবেশে যে কোন অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রিজিয়নের সদস্যগণ নিজ দেশের সীমান্তের অখন্ডতা রক্ষায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সবচাইতে বড় বিষয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মায়ানমারের ১০ লাখ জনগোষ্ঠীর শৃংখলা আনয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বিজিবি নিরলস কাজ করেছে।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টসহ দেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ ও যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলায়ও বেসরকারি প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য কক্সবাজার রিজিয়ন অগ্রনী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
এর আগে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কেক কাটেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এম ইমরুল হাসান। এতে প্রধান অতিথি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, র্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন, সাংবাদিক মাহবুবর রমান, মমতাজ উদ্দিন বাহারীসহ সরকারী, বেসরকারি উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ।
স্বাগত বক্তব্যে কক্সবাজার রিজিয়নের পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্ণেল মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, কক্সবাজার রিজিয়নের অধীনস্থ ব্যাটালিয়ন সমূহ গত এক বছরে সর্বমোট ৯৯৯.১০ কোটি টাকার দেশি-বিদেশি অস্ত্র, মাদকদ্রব্য এবং অন্যান্য চোরাচালানী মালামাল আটক করতে সক্ষম হয়। এছাড়া মায়ানমারে চলমান অস্থিতিশীল উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আশ্রয় নেয়া ৪৩৬ জন মায়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে নিরস্ত্রীকরণ ও প্রত্যাবাসন কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য উর্ধ্বতন দপ্তরে এবং বেসরকারি পরিমন্ডলে অত্র রিজিয়ন ব্যাপক ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। সবশেষে রিজিয়ন কমান্ডার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এম ইমরুল হাসান আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যাহ্ন ভোজের আমন্ত্রণ জানান।