রাশেদুল জামালপুর
জামালপুরের শিল্পাঞ্চল খ্যাত তারাকান্দিতে বাস পরিবহনের অফিস দখলকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে যেকোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
জানা যায়, ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কান্দারপাড়া গ্রামের বিএনপি নেতা জুয়েলের দুই ছেলে আঁখিদুল ইসলাম জনি ও জরিফের নেতৃত্ব একদল বিএনপি নেতাকর্মী ৬ আগষ্ট বাস পরিবহনের সাংগঠনিক সম্পাদক তোতা মোল্লার কাছ থেকে অফিসে বসার কথা বলে অফিসের চাবি নিয়ে তালা খুলে নতুন করে অন্য একটি তালা লাগিয়ে দেয়। সেই থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত বাস পরিবহনের অফিস বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার বেলা ১১ টার দিকে তারাকান্দি ট্রাক পরিবহন এলাকায় বিপ্লবের চায়ের দোকানের সামনে বাস পরিবহনের সদস্য বিএনপি নেতা সোলায়মান জনির কাছে অফিসের চাবি ফেরত চাইলে জনি ও সোলায়মানের গ্রপের লোকজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি, গালিগালাজ, হুমকি-ধমকির ঘটনা ঘটে। সে সময় জনি ও তার লোকজন প্রকাশ্য-দিবালোকে কোন নাম উল্লেখ না করে সেনাবাহিনীর কর্নেল’কে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারাকান্দি ট্রাক পরিবহনের সদস্য খোকন ড্রাইভার, আশরাফ ড্রাইভার, বাস পরিবহনের সদস্য মুকতেল, রেজাউল, বজলুসহ আরো অনেকের হস্তক্ষেপে জনি গ্রপ ও সোলায়মান গ্রুপকে দুইদিকে সরিয়ে দেয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষ্যদর্শী একাধিক ড্রাইভারের সাথে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন- বাস পরিবহন নিয়ে যা’ কিছুই ঘটুক না কেন? সেটা কান্দারপাড়া বাজারের বিষয়। ট্রাক পরিবহন এলাকায় এসে বাস পরিবহনের দখলদারিত্ব নিয়ে গন্ডগোল করা বাস পরিবহন নেতাদের ঠিক হয়নি। তারা আরো বলেন- বিএনপি নেতা জুয়েলের ছেলে আঁখিদুল ইসলাম জনির সেনাবাহিনীর কর্নেল’কে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি-ধমকির আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পোগলদিঘা ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন- ৫ আগষ্টের পর থেকে জুয়েলের দুই ছেলে জনি ও জরিফের অত্যাচার, দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজির কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তিনি আরো বলেন- জনি ও জরিফের কর্মকাণ্ড নিয়ে ইতোমধ্যেই উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হয়েছে।
কান্দারপাড়া বাজার বাস পরিবহনের সভাপতি মতিয়র রহমান জানান, জুয়েল ও তার দুই ছেলে জনি ও জরিফ বাস পরিবহনের কোন সদস্য নয়। ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ৬ আগষ্ট আমার সাংগঠনিক সম্পাদক তোতার কাছ থেকে অফিসে বসার কথা বলে অফিসের চাবি নিয়ে তালা খুলে অফিসের প্রধান দরজায় অন্য আরেকটি তালা লাগিয়ে দিয়েছে। সেই থেকে অদ্যবধি আমরা ড্রাইভার -হেলপাররা অফিসে বসতে পারছি না। এ নিয়ে আমরা খুব কষ্টে আছি। তিনি আরো বলেন- জনি ও জরিফে অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা জুয়েল ও তার দুই ছেলের মুঠোফোন বারবার কল করলেও তাতে তারা কেউ সাঁড়া দেয়নি।